রাশিয়ার অংশ হতে গণভোটের ডাক ইউক্রেনের ২ প্রদেশে
ইউক্রেনের দুই প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ে ও খেরসন দেশটি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাশিয়ার অংশ হতে চাইছে। এ জন্য এই দুই প্রদেশের প্রশাসনের তরফ থেকে ইতোমধ্যে এ বিষয়ে গণভোট আয়োজনের ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম রিয়া নভোস্তির বরাত দিয়ে সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির অপর সংবাদমাধ্যম আরটি নেটওয়ার্ক।
বিজ্ঞাপন
জাপোরিজ্জেয়ের গভর্নর এভগেনি বালিৎস্কি জানিয়েছেন, জাপোরিজ্জিয়ে প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন স্তরের ৭শ’রও বেশি জনপ্রতিনিধি এই গণভোটের অনুমোদন দিয়েছেন এবং সোমবার তিনি এই গণভোটের চুড়ান্ত অনুমোদন দিয়ে স্বাক্ষরও করেছেন।
খেরসনের প্রাদেশিক প্রশাসনে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, সেখানেও ‘রাশিয়ায় যোগ দেওয়া হবে কিনা’ প্রশ্নে গণভোট আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এবং ইতোমধ্যে তার তোড়জোরও শুরু হয়েছে।
দুই প্রদেশের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে হবে এই গণভোট।
এদিকে দুই প্রদেশ এমন আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ার তৎপরতা শুরু করায় ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রোববার তিনি সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন, যদি জাপোরিজ্জিয়ে এবং খেরসন তাদের পরিকল্পনামাফিক গণভোটের দিকে এগিয়ে যায়, সেক্ষেত্রে রাশিয়ার সঙ্গে সব প্রকার আলোচনা বন্ধ রাখবে ইউক্রেন।
তার এই সতর্কবার্তার জবাবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যলয় ক্রেমলিন থেকে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের উচিত রাশিয়াকে সতর্কবার্তা না দিয়ে নিজ দেশের নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো।
মঙ্গলবার ক্রেমলিনের প্রেস সেক্রেটারি ও মুখপাত্র সেখানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ক এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘তিনি (জেলেনস্কি) ভুল জায়গায় সতর্কবার্তা দিয়েছেন। গণভোটের ডাক আমরা দিই নি, দিয়েছে ইউক্রেনের জনগণ। আমাদের মতে, তার উচিত হবে রাশিয়াকে সতর্কবার্তা না দিয়ে নিজ দেশের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করা।’
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণার দু’দিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।
শনিবার ১৬২তম দিনে গড়িয়েছে ইউক্রেনে রুশ সেনাদের অভিযান। এই চার মাস সময়ের মধ্যে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লুহানস্ক, ইউক্রেনের দুই বন্দর শহর খেরসন ও মারিউপোল, দনেতস্ক প্রদেশের শহর লিয়াম, মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে রুশ বাহিনীর হাতে।
এদিকে, যুদ্ধ শুরুর এক সপ্তাহের মধ্যেই রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে শান্তি সংলাপ শুরু হয়। সংলাপের এক পর্যায়ে রাশিয়ার শর্ত অনুযায়ী নিজেদের সামরিক সক্ষমতা হ্রাসে রাজিও হয়েছিল ইউক্রেন।
তবে দু’মাস আগে কিয়েভ ঘোষণা দেয়, পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক সহায়তা নিয়ে রাশিয়াকে যুদ্ধে পরাস্ত করার আগ পর্যন্ত কোনো শান্তি সংলাপে বসবে না ইউক্রেন। তারপর থেকেই দু’দেশের মধ্যকার শান্তি সংলাপ বন্ধ রয়েছে।
এসএমডব্লিউ