‘যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত’ চীন, বলছে গ্লোবাল টাইমস
যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সম্ভাব্য তাইওয়ান সফরকে ঘিরে ব্যাপক সামরিক প্রস্তুতি নিচ্ছে চীন। সেই প্রস্তুতির কাজও প্রায় শেষ।
চীন-তাইওয়ান সীমান্ত এলাকায় ইতোমধ্যে কয়েকটি বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ, আধুনিক গানবোট, সাঁজোয়া যানসহ বিভিন্ন সামরিক উপকরণ জড়ো করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসসহ বেশ কয়েকটি চীনা সংবাদমাধ্যম।
বিজ্ঞাপন
— Global Times (@globaltimesnews) August 2, 2022
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে এ বিষয়ক বেশ কয়েকটি ভিডিও টুইট করেছে চীন ও তাইওয়ানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। তবে গ্লোবাল টাইমসের টুইট করা ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে ‘রেডি ফর কমব্যাট’ (যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত)।
এছাড়া চীন সকারের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল ‘ইয়িন সুরা’র টুইট করা ভিডিওতে তাইওয়ান সীমান্তের কাছে চীনের সেনাবাহিনীর সারিবদ্ধ সাঁজোয়া যানের বহর দেখা গেছে।
— Yin Sura (@yin_sura) August 2, 2022
মার্কিন সরকারে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি হিসেবে পূর্ব ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় সফরের উদ্দেশে সোমবার ওয়াশিংটন ত্যাগ করেন ন্যান্সি পেলোসি। সফরসূচি অনুযায়ী, ওয়াশিংটন থেকে প্রথমে সিঙ্গাপুর যাবেন তিনি; দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি সেইন ও প্রেসিডেন্ট হালিমা ইয়াকোবের সঙ্গে বৈঠকের পর মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান সফরেরও কথা রয়েছে তার।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তার সূত্রে জানা গেছে, চলতি এই সফরে তাইওয়ানে যাওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষের স্পিকারের। সেখানে স্বশাসিত এই দ্বীপভূখণ্ডের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েনের সঙ্গে বৈঠকও করবেন তিনি।
এদিকে, ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ানের আসতে পারেন— আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এ খবর প্রচারিত হওয়ার পর সোমবারই যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্কবার্তা দিয়েছে চীনের সরকার। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান সোমবার বেইজিংয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, যদি পেলোসি সত্যিই তাইওয়ান সফরে আসেন, তাহলে তার পরিণতি খুবই গুরুতর হবে।
মঙ্গলবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের অপর মুখপাত্র হুয়া চুনইয়িং বলেছেন, ন্যান্সির এই সফর কোনোভাবেই ব্যক্তিগত নয় এবং যদি যুক্তরাষ্ট্র একে আরও এগিয়ে নিয়ে যায়, সেক্ষেত্রে চীন ‘বৈধভাবেই প্রয়োজনীয় পাল্টা পদক্ষেপ নেবে।’
চীনের এই হুঁশিয়ারির জবাবে মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জন কিরবি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পেলোসির (তাইওয়ানে) যাওয়ার অধিকার রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র চীনের হুমকিকে ভয় পায় না। যদিও পেলোসি তাইওয়ানে যাবেন কিনা তা নিশ্চিত করেননি তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনও মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘স্পিকার তাইওয়ানে সফর করবেন কিনা তা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে তার ব্যক্তিগত ইচ্ছার ওপর।’
তবে মার্কিন প্রশাসন ও তাইওয়ান সরকারের অন্তত দুই জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সিএনএনকে নিশ্চিত করেছেন, চলতি সফরে তাইওয়ানে যাবেন পেলোসি।
এদিকে, ইতোমধ্যে পেলোসি ইস্যুতে চীনের পাশে অবস্থান স্পষ্ট করেছে রাশিয়া। দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের মুখাপাত্র দিমিত্রি পেসকভ মঙ্গলবার মস্কোতে এক সংবাদ সম্মেলনে সম্ভাব্য এ সফরকে ‘উস্কানিমূলক’ উল্লেখ করে বলেছেন, এই সময়ে পেলোসির সম্ভাব্য শহর এশিয়ায় অশান্তি উস্কে দিতে পারে।
এসএমডব্লিউ