দিনভর একের পর এক অভিযান। শুক্রবার (২৩ জুলাই) পশ্চিমবঙ্গের অন্তত ১৩টি জায়গায় অভিযান চালিয়েছে ভারতের তদন্ত সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ওই দিন সন্ধ্যায় ইডি কর্মকর্তারা যান টালিগঞ্জের একটি অভিজাত আবাসনে। সেখানে একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় নগদ ২০ কোটি টাকা। সঙ্গে পাওয়া যায় ২০টি মোবাইল ফোন। ইডির দাবি, ফ্ল্যাটটি পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের।

ইডির একটি সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় তাদের সাত জনের একটি দল সরকারি গাড়িতে টালিগঞ্জের অভিজাত ওই আবাসনে যায়। গাড়ি থেকে নেমে সোজা আবাসনে প্রবেশ করেন তদন্ত কর্মকর্তারা। ওই দলে ছিলেন দুজন নারী কর্মকর্তাও।

ইডি সূত্রে জানা গেছে, ওই ফ্ল্যাটে তিনটি ঘর। তার মধ্যে একটি ঘর বন্ধ। অন্য একটি ঘরে থাকেন অর্পিতা। তদন্ত কর্মকর্তারা সেই ঘরে ঢুকে দেখেন, ঘরের পাশেই রয়েছে একটি ওয়ারড্রব। কিন্তু সেটি বন্ধ। ইডির কর্মকর্তারা ওয়ারড্রব খুলতে বলেন অর্পিতাকে। তিনি ওয়ারড্রব খুলতেই দেখা যায় দু’টি বস্তা।

আরও পড়ুন: আমার ব্যাগে বোমা, ফ্লাইটের ভেতরে যাত্রীর চিৎকার

ওই সূত্রের দাবি, বস্তা খুলতেই দেখা যায় তাতে ভরা রয়েছে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। সবই দুই হাজার ও পাঁচশ টাকার নোট। ওই ফ্ল্যাটে তল্লাশি করে এরপর পাওয়া যায় ২০টি আইফোন।

ইডি এক সংবাদ বিবৃতিতে জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া টাকার সঙ্গে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির সম্পর্ক থাকতে পারে বলে তারা মনে করছেন।

এদিকে ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী পার্থের বাড়িতে অবস্থান করছে ইডি কর্মকর্তারা। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে যান ইডি কর্মকর্তারা। শনিবার (২৩ জুলাই) সকালেও তদন্তকারীরা সেখান থেকে বের হননি।

আরও পড়ুন: ‘পবিত্র’ পানিপানেই বিপদ! হাসপাতালে ভর্তি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী

তার বাড়ির বাইরে মোতায়েন রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশ। রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে ইডির গাড়িগুলো। সারা রাত কেউই বাড়ির বাইরে বের হয়নি। রাতে দুএক বার বাইরে এসেছিলেন পার্থের আইনজীবী অনিন্দ্যশেখর রাউত। তাকে পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। তবে ভেতরে কি হচ্ছে তা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি অনিন্দ্য।

অন্যদিকে তল্লাশি অভিযানে পার্থ ঘনিষ্ঠ এক নারীর ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার ২০ কোটি টাকার সঙ্গে তৃণমূলের কোনো সম্পর্ক নেই বলে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। টুইট করে এমনটা জানালেন তৃণমূলের পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।

কুণাল টুইটে লেখেন, ইডি যে টাকা উদ্ধার করেছে, তার সঙ্গে তৃণমূলের কোনো সম্পর্ক নেই। এই তদন্তে যাদের নাম আসছে, এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দেওয়ার দায়িত্ব তাদের বা তাদের আইনজীবীদের। কেন দলের নাম জড়িয়ে প্রচার চলছে, দল তা নজর রাখছে। যথা সময়ে বক্তব্য জানাবে।

তিনি জানান, তৃণমূল কোনোরকম অন্যায়কে প্রশ্রয় দেবে না।

এসএসএইচ