তাপমাত্রা আজও ৪০ ডিগ্রি, গরমে সেদ্ধ হচ্ছে ব্রিটেন
যুক্তরাজ্যে তাপদাহ কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সোমবারের মতো মঙ্গলবারও দেশটির অধিকাংশ অঞ্চলের তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, ইতিহাসে এই প্রথম ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রা দেখছে ব্রিটেনবাসী। এর আগে দেশটিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৮.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০১৯ সালে ব্রিটেনের কেমব্রিজ শহরে এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন : তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি, ইতিহাসের সবচেয়ে গরম দিন দেখল ব্রিটেন
ইউরোপের অধিকাংশ দেশের মতো শীতল জলবায়ুর দেশ যুক্তরাজ্যের জনজীবন চলমান এই তাপদাহে স্বাভাবিকভাবেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে ট্রেন পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে, দেশটির বিভিন্ন শহরের ব্যস্ত জনসমাগমপূর্ণ স্থানগুলো গত তিন-চার দিন ধরে ফাঁকা। বিভিন্ন চিড়িয়াখানার কর্তৃপক্ষ তাদের পশু-পাখিদের তাপের আঁচ থেকে মুক্ত রাখতে রীতিমোত হিমসিম খাচ্ছে।
খাবার ও কনফেকশনারির দোকানগুলোতে হু হু করে বিক্রি হচ্ছে আইসক্রিম ও ঠাণ্ডা কোমলপানীয়। ফ্যান ও এসির চাহিদা বাড়ছে ব্যাপকভাবে। ইতোমধ্যে দেশটির পার্লামেন্টের এমপি সরকারি অফিসের কর্মকর্তাদের কোট বা জ্যাকেট পরিধান না করার পরামর্শ দিয়েছে ব্রিটেনের সরকার।
ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো যুক্তরাজ্যের যাতায়াত ব্যবস্থাও মূলত রেল ও মেট্রোট্রেন নির্ভর। কিন্তু গত কয়েকদিনের তাপদাহে যুক্তরাজ্যের রেল লাইনগুলো বেঁকে যাওয়ায় রেল পরিষেবা বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে দেশটির সরকার।
যুক্তরাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী গ্র্যান্ট শ্যাপস বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ সম্পর্কে বলেন, ‘আমাদের পরিবহন অবকাঠামোর বড় অংশই তৈরি হয়েছিল আজ থেকে প্রায় দু’শ বছর আগে, রানী ভিক্টোরিয়ার আমলে। যারা এই অবকাঠামো তৈরি করেছিলেন, তারা দেশের শীতল জলবায়ুর বিষয়টিই মাথায় রেখেছিলেন। উচ্চ তাপমাত্রা সহনশীলতার ব্যাপারটি তাদের মনযোগে আসেনি।’
‘রেল ব্যবস্থা কিংবা পরিবহন অবকাঠামোকে যদি হালনাগাদ করতে হয়…এই মুহূর্ত থেকে কাজ শুরু করলেও তা সম্পূর্ণ শেষ করতে কয়েক বছর লেগে যাবে।’
এদিকে দেশটির আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেই যুক্তরাজ্যের শুরু হয়েছে এই তাপদাহ এবং সামনের বছরগুলোতে গ্রীষ্মকালে নিয়মিতই তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি বা তার আশে পাশে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে যুক্তরাজ্যে।
ব্রিটেনের ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটের জলবায়ু ও সামষ্টিক অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সনি কাপুর বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের সাধারণ আর দশজনের মতো আমিও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত শারীরিক ভোগান্তিকে গুরুত্ব দিতাম না, কিন্তু এবার দিতে বাধ্য হচ্ছি। আমি কখনও ভাবতেও পারিনি যে এই দেশে আমরা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা দেখব।’
এসএমডব্লিউ