সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড
বাইডেনকে সৌদি যুবরাজের খোঁচা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের মতো ভুলের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে কাজ করছে সৌদি আরব। তবে ইরাকসহ অন্যান্য এলাকায় একই ধরনের ভুল যুক্তরাষ্ট্রও করছে। শনিবার সৌদি আরবের একজন সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে দুই নেতার বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
শুক্রবার সৌদি আরবের ডি ফ্যাক্টো শাসকের সাথে সাক্ষাতের পর জো বাইডেন বলেছিলেন, ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক খাশোগি হত্যার জন্য সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদকে দায়ী করেছেন তিনি। এ সময় সৌদি যুবরাজ বাইডেনকে বলেন, ভবিষ্যতে অনুরূপ ভুল প্রতিরোধ করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সৌদি আরব।
বিজ্ঞাপন
তবে বৈঠকে খাশোগি হত্যার দায় অস্বীকার করেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স। দুই নেতার আলোচনার বিষয়ে শুক্রবার রয়টার্সের কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে সৌদি আরবের ওই কর্মকর্তা বলেছেন, অন্যান্য দেশের ওপর বলপ্রয়োগ করে নির্দিষ্ট কিছু মূল্যবোধ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে তা হিতে বিপরীত হতে পারে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্য সফরে গিয়ে শুক্রবার সৌদি প্রিন্সের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জো বাইডেন। শনিবার মিসর, জর্ডান এবং ইরাকসহ উপসাগরীয় ছয়টি দেশের প্রতিনিধিদের সাথে এক সম্মেলনে মিলিত হয়েছেন তিনি।
২০১৮ সালে খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর সৌদি আরবকে বৈশ্বিক মঞ্চে একটি ‘দুর্বৃত্ত’ রাষ্ট্র হিসেবে উপস্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বাইডেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মার্কিন স্বার্থ বিবেচনায় বিশ্বের শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক এবং আরবের অন্যতম প্রধান পাওয়ার হাউস এই রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক উন্নত করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
সৌদি যুবরাজ বলেছেন, ‘একই বছরে বিশ্বের অন্যান্য অংশেও সাংবাদিকদের হত্যার মতো একই ধরনের দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছিল। ইরাকের আবু গারিব কারাগারে এবং অন্যান্য অঞ্চলেও একই ধরনের অনেক ভুল করেছে যুক্তরাষ্ট্রও।’
বাইডেনের সাথে বৈঠকে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি অভিযানের সময় ফিলিস্তিনি-আমেরিকান সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহকে হত্যার কথাও তুলে ধরেন।
যুবরাজের বরাত দিয়ে সৌদি আরবের ওই কর্মকর্তার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্বের সব দেশ বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সৌদি আরব কিছু মূল্যবোধের বিষয়ে একমত এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে দ্বিমত পোষণ করে। তবে বলপ্রয়োগ করে সেসব মূল্যবোধ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে তা বিপরীত প্রভাব তৈরি করতে পারে। যা ইরাক এবং আফগানিস্তানে ঘটেছিল; যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ব্যর্থ হয়েছে।
চলতি বছরের শুরুতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ শুরুর পর থেকে সৌদি আরবের প্রতি নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শন করে আসছে ওয়াশিংটন। এই যুদ্ধের কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ জ্বালানি সরবরাহ সংকটের সূচনা হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পাল্টেছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে সৌদি আরবের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আদেল আল-জুবায়ের সাংবাদিকদের বলেছেন, দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে চলছে।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস