নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট ও গণআন্দোলনের মধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। সামরিক বিমানে করে আশ্রয় নিয়েছেন দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ মালদ্বীপে।

তবে সেখানেও যেন শান্তি নেই। মালদ্বীপে পৌঁছানোর পরই দেশটিতে বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া। বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি এবং সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

বার্তাসংস্থা এএফপি বলছে, বিক্ষোভ ও গণআন্দোলনের মধ্যে পালিয়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে বুধবার মালদ্বীপে বিক্ষোভের মুখোমুখি হয়েছেন। এদিন এই দ্বীপরাষ্ট্রটিতে বহু মানুষ তাকে নিরাপদ আশ্রয় প্রদান না করার আহ্বান জানান।

মূলত মালদ্বীপে বসবাতরত শ্রীলঙ্কান নাগরিকরাই এদিন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভের সময় প্রবাসী শ্রীলঙ্কানরা পতাকা ও প্ল্যাকার্ড বহন করেন এবং প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসের নিন্দা জানান।

এএফপি বলছে, রাজধানী মালেতে কর্মরত শ্রীলঙ্কানদের হাতে বিক্ষোভের সময় কালো ও সাদা রংয়ের একটি ব্যানার ছিল। এতে লেখা ছিল, ‘মালদ্বীপের প্রিয় বন্ধুরা, দয়া করে আপনার সরকারকে অপরাধীদের রক্ষা না করার জন্য অনুরোধ করুন।’

এদিকে সামরিক বিমানে করে মালদ্বীপের ভেলানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের পৌঁছানোর এবং সেখান থেকে বের হওয়ার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। ভিডিওতে দেখা যায়, ভেলানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় রাজাপাকসেকে অপমান করার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা চিৎকার করছে।

অবশ্য এই ভিডিওটি যাচাই করা হয়নি বলে জানিয়েছে এএফপি। এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বুধবার মালেতে একটি কৃত্রিম সৈকত এলাকায় শ্রীলঙ্কানরা প্রতিবাদ শুরু করার পরপরই দেশটির বিশেষ অপারেশন পুলিশ বিক্ষোভকারীদের প্ল্যাকার্ড বাজেয়াপ্ত করে এবং বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

অন্যদিকে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালদ্বীপে পৌঁছানোর পর প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে দেশটির একটি এক্সক্লুসিভ রিসোর্টে অবস্থান করছেন এবং বুধবার রাতের দিকে  সংযুক্ত আরব আমিরাত বা সিঙ্গাপুরে উদ্দেশে রওনা হতে পারেন।

কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার একটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, ‘তিনি এই দু’টি স্থানে নির্বাসনে যাচ্ছেন। এসব স্থানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বেশ চ্যালেঞ্জের হবে কারণ উভয় দেশেই বহু সংখ্যক শ্রীলঙ্কান রয়েছে।’

এদিকে মালদ্বীপে প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসেকে বিনা বাধায় প্রবেশ করতে দেওয়ার বিরোধিতা করেছে দেশটির প্রধান বিরোধী দল প্রগ্রেসিভ পার্টি। একজন পিপিএম নেতা এএফপিকে বলেছেন, ‘রাজাপাকসেকে আশ্রয় দিয়ে আমরা শ্রীলঙ্কায় আমাদের বন্ধুদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছি। কারণ রাজাপাকসে তার নিজের দেশে একজন ঘৃণ্য ব্যক্তিত্ব।’

টিএম