ফাইল ছবি

শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট ও গণআন্দোলনের মধ্যে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর তাকে এই পদে নিয়োগ দেওয়া হলো।

শ্রীলঙ্কান পার্লামেন্টের স্পিকারের বরাত দিয়ে বুধবার (১৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রটির পার্লামেন্টের স্পিকারের মতে, প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে সবেমাত্র ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হয়েছেন।

তিনি আরও বলছেন, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে তাকে শ্রীলঙ্কার সংবিধানের ৩৭.১ অনুচ্ছেদে নিয়োগের কথা জানিয়েছেন। তবে রাজাপাকসের পক্ষ থেকে সরাসরি কোনো কথা বলা হয়নি।

প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সমস্ত ঘোষণাই পার্লামেন্টের স্পিকার এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এসেছে।

এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে একটি সামরিক বিমানে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে মালদ্বীপ পালিয়ে যান বলে জানান দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা।

বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ৭৩ বছর বয়সী গোতাবায়া, তার স্ত্রী ও এক দেহরক্ষীসহ চার যাত্রী নিয়ে সামরিক বিমান অ্যান্তোনভ–৩২ মঙ্গলবার মধ্যরাতে বন্দরনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মালদ্বীপের উদ্দেশে যাত্রা করে।

মূলত শ্রীলঙ্কার কোনো আইনেই ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তারের বিধান নেই। তবে পদত্যাগের পর গ্রেপ্তার হওয়ার হাত থেকে বাঁচতে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া বিদেশে পালিয়ে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে শ্রীলঙ্কাজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে পালানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দিলেন তিনি। এছাড়া শ্রীলঙ্কান একটি প্রদেশে কারফিউও জারি করা হয়েছে।

শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রীলঙ্কাজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের মুখপাত্র দিনৌক কলোম্বেজকে উদ্ধৃত করে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট দেশের বাইরে রয়েছেন। তাই দেশের পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য দেশজুড়ে জরুরি অবস্থার ঘোষণা করা হয়েছে।’

পুলিশ জানিয়েছে, দেশের পশ্চিম প্রদেশ অর্থাৎ কলম্বোসহ একাধিকায় জায়গায় কারফিউ কার্যকর করা হয়েছে। দেশজুড়ে বিক্ষোভে লাগাম টানতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক পুলিশ কর্মকর্তা এএফপিকে জানিয়েছেন, ‘কলম্বোয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের বাইরে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ চলছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।’

টিএম