খরা ভেঙেছে ৭০ বছরের রেকর্ড, জরুরি অবস্থা জারি ইতালিতে
ভয়াবহ খরা দেখা দেওয়ায় উত্তর ইতালির ৫ অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির সরকার। দেশটির আবহাওয়া দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, গ্রীষ্মের মাঝামাঝি এই সময়ে উত্তরাঞ্চলে খরার যে তেজ দেখা যাচ্ছে, তা গত ৭০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ।
ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুর দেশ ইতালিতে শীত ও বসন্তকালে বৃষ্টিপাত হয়, গ্রীষ্মকাল থাকে শুষ্ক। কিন্তু গত শীত ও বসন্তে দেশটির উত্তরাঞ্চলে উষ্ণ আবহাওয়া ও রেকর্ড পরিমাণ কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় চলতি গ্রীষ্মের শুরু থেকেই শুরু হয়েছে খরা।
বিজ্ঞাপন
বিপর্যয় এড়াতে মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তি জারির মাধ্যমে জরুরি অবস্থা জারি করেছে সরকার।
সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, খরায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছে এমিলিয়া-রোমাগনা, ফ্রিউলি ভেনেজিয়া গিউলিয়া, লম্বার্দি, পিয়েদমন্ড এবং ভেনেটো— এই পাঁচ এলাকা। তীব্র পানিসংকট চলতে থাকায় এই ৫ এলাকার বাসিন্দাদের পানি সরবরাহের জন্য ৩ কোটি ৬৫ লাখ ইউরো সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে এই পাঁচ অঞ্চলের পৌরসভাসমূহের বাসিন্দাদের রেশনিং ভিত্তিতে পানি সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ।
ইতালির কৃষক ও কৃষিশ্রমিকদের সংগঠন কলডিরেট্টির নেতারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, খরার কারণে চলতি বছর ইতালির মোট কৃষি উৎপাদন ৩০ শতাংশেরও বেশি ব্যাহত হবে।
সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘খরাজনিত অত্যধিক বিপর্যয় এড়াতে জরুরি অবস্থা জারি করা হলো। উপস্থিত এই দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
শিগগির যদি পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, সেক্ষেত্রে দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা রয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জনানো হয়।
ইতালির দীর্ঘতম নদীর নাম পো। উত্তরাঞ্চল থেকে পূর্বাঞ্চলে প্রবাহিত হওয়া এই নদী সাড়ে ছয়শ’ কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ। দেশের যেসব অঞ্চলের ওপর দিয়ে পো নদী বয়ে গেছে, সেসব অঞ্চলের কৃষি ও সেচ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে এই নদীকে ভিত্তি করেই।
ইতালির কৃষকরা জানিয়েছেন, নিম্নবৃষ্টিপাত ও খরার প্রভাবে পো নদীর পানির স্তর নিচে নেমে গেছে; নদীতে ঢুকে পড়েছে সমুদ্রের লবণাক্ত পানি। ফলে, ইতালির বিশাল অংশের কৃষিজাত ফসল গ্রীষ্মের শুরুতেই ধ্বংস হয়ে গেছে।
এসএমডব্লিউ/জেএস