লিসিচানস্ক শহর দখল করেছে রাশিয়া, স্বীকার ইউক্রেনের
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লিসিচানস্কের দখল নেওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিল রাশিয়া। প্রথমে মস্কোর এই দাবিতে আপত্তি জানালেও পরে তা স্বীকার করে নিয়েছে ইউক্রেন। ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর পাশাপাশি লিসিচানস্কের পতনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও।
সোমবার (৪ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। এতে বলা হয়েছে, দেশের পূর্বাঞ্চলীয় শহর লিসিচানস্ক রুশ বাহিনীর দখলে চলে গেছে বলে নিশ্চিত করেছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী।
বিজ্ঞাপন
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর জেনারেল স্টাফ বলেছেন, ‘তীব্র লড়াইয়ের পর লিসিচানস্কে নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাহিনী।’
এর আগে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু বলেছিলেন, রুশ বাহিনী লিসিচানস্ক শহর দখল করেছে এবং লুহানস্ক অঞ্চলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
বিবিসি বলছে, লিসিচানস্কে রুশ ও রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সংখ্যা ইউক্রেনের সৈন্যদের চেয়ে বেশি। ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর জেনারেল স্টাফ বলেছেন, ‘ইউক্রেনীয় প্রতিরোধ যোদ্ধাদের জীবন বাঁচাতে এই শহর থেকে তাদেরকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
আরও বলা হয়েছে, আর্টিলারি, বিমান, সাধারণ সৈনিক এবং অন্যান্য বাহিনী মিলে রাশিয়ানরা বহু সুবিধা নিয়ে ইউক্রেনীয়দের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে।
অন্যদিকে রাশিয়ার হাতে পূর্বাঞ্চলীয় লিসিচানস্ক শহরের পতনের কথা নিশ্চিত করে রোববার ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্বীকার করেছেন যে, ডনবাস অঞ্চলের এই শহর থেকে কিয়েভের বাহিনীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে দূরপাল্লার পশ্চিমা অস্ত্রের সাহায্যে এই শহরের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
লিসিচানস্ক শহরটি ছিল লুহানস্ক অঞ্চলের ইউক্রেনীয়-নিয়ন্ত্রিত শেষ শহর। এই শহরটি মূলত ডনবাসের শিল্পাঞ্চলীয় এলাকার অংশ। এর আগে রাশিয়া গত মাসে নিকটবর্তী শহর সেভেরোদোনেতস্ক দখল করে।
এদিকে ইউক্রেনের স্লোভিয়ানস্ক শহরে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর হামলায় ৬ জন নিহত হয়েছেন। রোববারের এই হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২০ জন। এই শহরের পাশাপাশি একইদিন রাশিয়ার হামলা হয়েছে আরেক পূর্বাঞ্চলীয় শহর ক্রামতোরস্কেও।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট বলেছেন, রাশিয়ান সেনাবাহিনী রোববার পূর্বাঞ্চলীয় শহর স্লোভিয়ানস্ক ও ক্রামতোরস্কের পাশাপাশি খারকিভ শহরেও হামলা করেছে। এসব হামলায় রকেট সিস্টেমের পাশাপাশি সোভিয়েত আমলের স্মার্চ রকেট দিয়ে গোলাবর্ষণ করেছে তারা।
তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের প্রতিটি শহর ধ্বংস করার জন্য রাশিয়ার কাছে যথেষ্ট অস্ত্র রয়েছে। রোববার রাতে দেওয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়ার হামলায় শুধু স্লোভিয়ানস্ক শহরেই ছয়জন নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন।’
টিএম