তদন্তে সহযোগিতা করছেন নুপুর শর্মা, জানাল দিল্লি পুলিশ
মহানবী (সা.) কে নিয়ে করা মন্তব্যের জেরে বিজেপির সাবেক মুখপাত্র নুপুর শর্মার বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছে, তার তদন্তে পুলিশকে সহযোগিতা করছেন তিনি। দিল্লি পুলিশের ইন্টেলিজেন্স ফিউশন অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক অপারেশন্স বিভাগের ডেপুটি কমিশনার কেপিএস মালহোত্রা ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
চলতি মাসের শুরুর দিকে দিল্লিতে নুপুর শর্মার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল। দুই সপ্তাহ আগে থানায় হাজির হতে তাকে সমনও পাঠিয়েছিল দিল্লি পুলিশ; কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনি নিজে থেকে থানায় আসেননি, পুলিশও তাকে গ্রেপ্তার করেনি।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার এই মামলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সুপ্রিম কোর্ট। মামলাটি নিয়ে পুরো দিন দিল্লি পুলিশ বিভাগে একাধিক বৈঠক হয়েছে বলে জানা গেছে।
ডেপুটি কমিশনার মালহোত্রা পিটিআইকে জানান, থানায় উপস্থিত না হলেও গত ১৮ জুন মামলায় জবানবন্দি দিয়েছেন নুপুর শর্মা এবং আইন অনুযায়ী সেই জবানবন্দি রেকর্ডও করা হয়েছে।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এখনও কোনো নোটিশ জারি করা হয়নি, তবে কমিশনার মালহোত্রা জানিয়েছেন, যখন প্রয়োজন হবে, তাকে নোটিশ দেওয়া হবে।
নূপুর শর্মা তাঁর মন্তব্য ঘিরে করা সব মামলা দিল্লিতে স্থানান্তর করতে পিটিশন সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন করেছিলেন। শুক্রবার পিটিশনের শুনানিতে নূপুর শর্মার মন্তব্যের সমালোচনা এবং তাঁর বিরুদ্ধে করা মামলায় দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সুপ্রিম কোর্ট।
দিল্লি পুলিশের উদ্দেশে সুপ্রিম কোর্ট বেঞ্চ বলেন, ‘দিল্লি পুলিশ কী ভূমিকা পালন করেছে? আমাদের মুখ খুলতে বাধ্য করবেন না; কী নিয়ে টেলিভিশন বিতর্কের আয়োজন করা হয়েছিল? একটা ইস্যু উসকে দিতে? কেন তারা একটি বিচারাধীন বিষয়কে বিতর্কের জন্য নির্ধারণ করেছিল?’
সর্বোচ্চ আদালত আরও বলেন, ‘তিনি (নূপুর শর্মা) একটি দলের মুখপাত্র তাতে কী? তিনি ভেবেছেন, তাঁর প্রতি সরকারের সমর্থন রয়েছে এবং দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা ছাড়াই তিনি যেকোনো বক্তব্য দিতে পারেন?’
একই ধরনের অন্য মামলাগুলোয় ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে ইঙ্গিত করে বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, ‘যখন আপনারা অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেন, তারা তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার হন। যখন সেটা আপনাদের বিরুদ্ধে হয়, তখন আর কেউ আপনাদের স্পর্শ করার সাহস পায় না।’
নূপুর শর্মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ১৭ জুন দিল্লি আসে মুম্বাই পুলিশের একটি টিম। কিন্তু তারা তাঁকে পায়নি। তাঁর অবস্থান সম্পর্কেও কিছু জানতে পারেনি।
এক টেলিভিশন বিতর্কে মহানবী (সা.)–কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগ ওঠে নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে। বিজেপির দিল্লি শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন কুমার জিন্দালও মহানবী সম্পর্কে টুইটারে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। বিজেপির এই দুই নেতার মন্তব্যে দেশ-বিদেশে নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নূপুর শর্মাকে সাময়িক বরখাস্ত ও জিন্দালকে বহিষ্কার করে বিজেপি।
এসএমডব্লিউ