জন্মের সময় শিশুর মাথা বিচ্ছিন্ন, রয়ে গেল মায়ের পেটে
প্রসববেদনা শুরু হওয়ার পর এক নারীকে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু সেখানে নেই কোনো স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। পরে অনভিজ্ঞ এক স্বাস্থ্যকর্মী সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে হলো হিতে বিপরীত।
নবজাতকের দেহের নিম্নাংশ যখন ওই স্বাস্থ্যকর্মীর হাতে, তখন মাথা ছিঁড়ে রয়ে গেল মায়ের পেটেই। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশে। মঙ্গলবার (২১ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআই।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের একটি গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এক স্বাস্থ্যকর্মী সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় এক নবজাতক শিশুর মাথা বিচ্ছিন্ন করে মাতৃগর্ভেই রেখে দেয়। গুরুতর চিকিৎসা অবহেলার এই ঘটনায় ৩২ বছর বয়সী ওই নারীর জীবন হুমকির মধ্যে পড়ে যায়।
এদিকে মর্মান্তিক এই ঘটনায় বিস্তারিত জানতে এবং দোষীদের খুঁজে বের করতে একটি মেডিকেল তদন্ত বোর্ড গঠন করেছে সিন্ধ প্রদেশের সরকার।
পাকিস্তানের জামশোরো লিয়াকত ইউনিভার্সিটি অব মেডিকেল অ্যান্ড হেলথ সায়েন্সেস (এলইউএমএইচএস)-এর গাইনোকোলজি ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক রাহিল সিকান্দার বলছেন, ‘সিন্ধ প্রদেশের থারপারকার জেলার প্রত্যন্ত একটি গ্রামের এক হিন্দু নারীর প্রসববেদনা শুরু হলে পরিবারের সদস্যরা তাকে স্থানীয় একটি গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে (আরএইচসি) নিয়ে যান।’
‘কিন্তু সেখানে তারা কোনো নারী স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ পাননি। এই পরিস্থিতিতে সেখানকার অনভিজ্ঞ এক স্বাস্থ্যকর্মী সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে তাকে ট্রমার মধ্যে ফেলে দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, রোববার সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে ওই আরএইচসি’র কর্মী মায়ের গর্ভেই নবজাত শিশুর মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলে এবং শেষপর্যন্ত সেটি মায়ের পেটের ভেতরেই রেখে দেয়।
এই পরিস্থিতিতে প্রসূতি ওই নারীর জীবন হুমকির মুখে পড়লে তাকে দ্রুত মিথির নিকটবর্তী একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সেখানেও ওই নারীর চিকিৎসার কোনো বিশেষ সুবিধা ছিল না।
অবশেষে পরিবারের সদস্যরা একপর্যায়ে ওই নারীকে এলইউএমএইচএস-এ নিয়ে যান। সেখানে ওই নবজাতকের শরীরের বাকি অংশ মায়ের গর্ভ থেকে বের করা হয় এবং এতে করে ওই মায়ের জীবনও ঝুঁকিমুক্ত হয়।
সিকান্দার বলেন, শিশুটির মাথা ভেতরে আটকে যাওয়ায় মায়ের জরায়ু ফেটে গেছে এবং ওই নারীর জীবন বাঁচাতে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার পেট উন্মুক্ত করে মাথাটি বের করতে হয়েছে।
সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে অনভিজ্ঞ স্বাস্থ্যকর্মীর ভয়ঙ্কর এই ভুলের ঘটনায় বিস্তারিত জানতে সিন্ধু স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক ডা. জুমান বাহোতো পৃথক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, প্রকৃত ঘটনা ঠিক কী ঘটেছে তা তদন্ত করে উদঘাটন করবে কমিটি। বিশেষ করে চাচরোর ওই আরএইচসিতে গাইনোকোলজিস্ট এবং নারী কর্মীদের অনুপস্থিতি খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি।
টিএম