দাবি আইএসের
মহানবীকে (সা.) অবমাননার প্রতিশোধে গুরুদুয়ারায় হামলা
আফগানিস্তানের শিখদের উপাসনালয় গুরুদুয়ারায় হামলার দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। ভারতে বিজেপির নেতাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে অবমাননার প্রতিশোধে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে আইএস।
গত মাসের শেষের দিকে মহানবীকে নিয়ে বিজেপি নেতা নুপুর শর্মা ও দলটির নয়াদিল্লি শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন জিন্দালের অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে বিশ্বের কয়েকটি দেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ ভারতের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ওই মন্তব্যের কড়া প্রতিবাদ এবং ভারতকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানায়।
বিজ্ঞাপন
নিজেদের বার্তা সংস্থা আমাকে প্রকাশিত এক বার্তায় আইএস বলেছে, হিন্দু, শিখ এবং মুরতাদদের— যারা আল্লাহর রসূলকে অবমাননাকারীদের সুরক্ষা দিয়েছে; তাদের লক্ষ্য করে শনিবার গুরুদুয়ারায় হামলা চালানো হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক এই গোষ্ঠী বলেছে, তাদের একজন যোদ্ধা কাবুলে হিন্দু ও শিখদের একটি গুরুদুয়ারায় প্রবেশ করে সেখানকার নিরাপত্তারক্ষীকে হত্যা করেন। পরে মেশিনগান এবং হ্যান্ড গ্রেনেড দিয়ে গুরুদুয়ারায় গুলি চালান।
শনিবারের এই হামলায় গুরুদুয়ারায় অন্তত দু’জন নিহত ও আরও সাতজন আহত হন। আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আবদুল নাফি তাকোর বলেছেন, হামলাকারীরা গুরুদুয়ারায় প্রবেশ করার সময় অন্তত একটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে সেখানে আগুন ধরে যায়।
আফগানিস্তানে ভারত থেকে মানবিক সহায়তা বিতরণের বিষয়ে আলোচনার জন্য ভারতীয় একটি প্রতিনিধিদল কাবুলে যাওয়ার পর ওই হামলা হয়। আফগান এবং ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, প্রতিনিধি দলটি তালেবান কর্মকর্তাদের সাথে ভারতীয় দূতাবাস পুনরায় চালু করার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছে। গত বছরের আগস্টে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর ভারতীয় দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
তালেবানের ক্ষমতায় ফিরে আসার পর আফগানিস্তানজুড়ে বোমা হামলার সংখ্যা কমেছে। তবে দেশটির সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি হামলা হয়েছে। সেখানে বেশিরভাগ হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস।
আইএস আফগানিস্তানের তালেবানের মতো সুন্নি ইসলামপন্থী হলেও উভয় গোষ্ঠী একে অপরের তিক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী এবং আদর্শগত দিক থেকে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক বিভাজন রয়েছে।
সত্তরের দশকে আফগানিস্তানে প্রায় পাঁচ লাখ শিখ বসবাস করলেও বর্তমানে দেশটিতে সেই সংখ্যা মাত্র ২০০ জনে নেমেছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অনেক নারী ও শিশু গুরুদুয়ারায় আশ্রয় নিয়েছিলেন; শনিবার সেই গুরুদুয়ারায় হামলা হয়েছে।
গত কয়েক বছর দেশটিতে বারবার হামলার শিকার হয়েছেন এই সম্প্রদায়ের সদস্যরা। ২০২০ সালের মার্চে কাবুলের অপর একটি গুরুদুয়ারায় বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৫ জন নিহত হন। ওই হামলারও দায় স্বীকার করে আইএস।
সূত্র: এএফপি।
এসএস