ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিষ্ণুপুরের সরকারি শিশু উন্নয়ন পরিষেবা প্রকল্পের আওতায় প্রসূতি মা ও শিশুদের মাঝে বিনামূল্যে সরবরাহ করা খিচুড়িতে সাপের দেহের অংশ পাওয়া নিয়ে ব্যাপক তুলকালাম শুরু হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার বলছে, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রান্না করা খাবারে পাওয়া গেছে সাপের দেহাংশ। আর এই অভিযোগ উঠেছে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর শহরের বাগডোবা এলাকায়। এই ঘটনার পর সেখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পরে শিশুদের নিয়ে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে হাজির হয়েছেন অভিভাবকরা। খাবারে পাওয়া বস্তুটি সাপের দেহ কিনা তা জানতে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

বিষ্ণুপুর শহরের আট নম্বর ওয়ার্ডের বাগডোবা এলাকার একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে ৭০ জন শিশু এবং ২৫ জন প্রসূতিকে রান্না করা খাবার দেওয়া হয়। অন্যান্য দিনের মতো শনিবার সকালে ওই কেন্দ্রে খিচুড়ি রান্না করে বিতরণ করা হয়। খাবার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে এক শিশুকে খেতে দেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। সেই সময় খিচুড়ির মধ্যে সাপের দেহাংশ দেখতে পান শিশুটির মা। এই ঘটনার কথা জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কে অধিকাংশ শিশুকে নিয়ে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে যান অভিভাবকরা। অন্যান্যদের তেমন উপসর্গ না থাকলেও একটি শিশুর বমিভাব থাকায় হাসপাতালে তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

উজ্জ্বলা বিবি নামে এক নারী বলেন, ‌‘অন্যান্য দিনের মতোই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে খিচুড়ি এনে ছেলেকে খাইয়েছি। তারপর শুনলাম এক জনের খিচুড়িতে সাপ পাওয়া গেছে। তাদের বাড়িতে গিয়ে থালায় থাকা খিচুড়ির মধ্যে সাপের দেহাংশ দেখতে পেলাম। এরপর আমার ছেলে এক বার বমি করায় এখন ভয়ে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।’

একই সুর ইশমাতারা বিবি নামের আরেক শিশুর মায়ের কণ্ঠেও। তিনি বলেন, ‘অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে বাড়িতে আনা খিচুড়িতে কেঁচোর মতো কিছু দেখতে পাই। পরে পরিবারের লোকজন এবং প্রতিবেশীরা দেখে বলেন, ওটা সাপের দেহাংশ। আর সাহস করে বাচ্চাকে খিচুড়ি খাওয়াইনি।’

এই ঘটনার খবর পেয়ে বাগডোবায় যান বিষ্ণুপুর পৌরসভা, মহকুমা এবং ব্লক প্রশাসনের কর্মকর্তারা। বিষ্ণুপুর থানা পুলিশ খাবারের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে। বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে অসুস্থ শিশুদের দেখতে যান বিষ্ণুপুরের ভারপ্রাপ্ত সিডিপিও জয়ব্রত কুন্ডু।

তিনি বলেন, ‘ওই কেন্দ্র থেকে শিশু এবং প্রসূতি মিলিয়ে মোট ৬৫ জন রান্না করা খাবার নিয়েছিলেন। পরে খাবারে সাপ বেরোনোর অভিযোগ শুনি। খবর পাওয়ার পরই আমাদের দফতরের কর্মকর্তা ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে সেই খাবার ফেলে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখে ঘটনার তদন্ত করা হবে।’

বিষয়টি নিয়ে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শুভঙ্কর কয়াল বলেন, ‘১১টি শিশুকে হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। কারও তেমন গুরুতর উপসর্গ নেই। উপসর্গ দেখা দিলে নির্দিষ্ট বিধি অনুযায়ী চিকিৎসা করা হবে।’

এসএস