ছবি: এনডিটিভি

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের কারতে পারওয়ান এলাকার একটি গুরুদুয়ারায় (শিখ ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়) বন্দুক ও বোমা হামলা হয়েছে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন দুই জন।

আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যম তোলো নিউজের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে ভারতের সংবাদমাধ্যম এএনআই জানিয়েছে, যে গুরুদুয়ারায় হামলা হয়েছে—তার নাম দশমেশ সাহিব গুরুদুয়ারা। শনিবার সকালের দিকে এই হামলা ঘটে।

ভারতের রাজনৈতিক দল বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতা মাঞ্জিন্দার সিং সিরসা ইতোমধ্যে দশমেশ সাহিব গুরুদুয়ারার প্রধান পুরোহিত গুরনাম সিংয়ের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। এএনআইকে সিরসা বলেন, অন্যান্য দিনের মতো শনিবার সকালেও ‘পারকাশ’ (শিখ ধর্মাবলম্বীদের সকাল বেলার প্রার্থনা) চলছিল গুরুদুয়ারাটিতে। এ সময় হঠাৎ কয়েকজন বন্দুকধারী গুরুদুয়ারায় ঢুকে পড়ে।

গুরুদুয়ারায় ঢোকার আগেই ফটকের কাছে দাঁড়ানো প্রহরীকে গুলি করে হত্যা করেছিল তারা। ঢোকার পর আরেক প্রস্থ এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে দুর্বৃত্তরা। তার কয়েক মিনিট পরই গুরুদুয়ারা সংলগ্ন এলাকায় পর পর দু’টি শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়।

সিরসা জানান, শনিবারের পারকাশের সময় গুরুদুয়ারার ভেতরে ২৫ থেকে ৩০ জন আফগান শিখ উপস্থিত ছিলেন। ফটকের কাছে বন্দুকের গুলির শব্দ শোনার পরই তারা ছোটাছুটি করে গুরুদুয়ারা থেকে বেরোনোর চেষ্টা করেন এবং ১০-১২ জন সেই চেষ্টায় সফলও হন; কিন্তু বাকিরা বের হওয়ার আগেই বন্দুকধারীরা উপস্থিত হয়।

গুরনাম সিংয়ের বরাত দিয়ে এএনআইকে সিরসা জানান, যে দু’জন নিহত হয়েছেন, তারা দু’জনই বন্দুক হামলার শিকার। বোমা হামলায় হতাহতদের সম্পর্কে কোনো তথ্য এখনও জানা যায়নি।

এখন পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে ভারতীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের দৃঢ় বিশ্বাস— এ হামলার জন্য দায়ী আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আফগানিস্তান শাখা ইসলামিক স্টেট-খোরাসান (আইএস-কে)।

এদিকে, এ ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে শনিবার একটি বিবৃতি দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানে বলা হয়েছে, ‘আফগানিস্তানের রাজধানীতে পবিত্র গুরুদুয়ারায় সন্ত্রাসী হামলা ও মৃত্যুর ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা নিবিড় ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি এবং এ সম্পর্কিত আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছি।’

কট্টর সুন্নি ইসলাপন্থী গোষ্ঠী তালেবান শাসিত আফগানিস্তানের সংখ্যালঘু শিখ ধর্মাবলম্বীরা প্রতিনিয়ত হামলার ঝুঁকিতে থাকে। কাবুলের শিখ সম্প্রদায়ের ওপর এর আগে সবচেয়ে বড় হামলা হয়েছিল ২০২০ সালের মার্চে।

সেবার কাবুলের শ্রী গুরু হার রাই সাহিব গুরুদুয়ারায় বন্দুক হামলা চালিয়েছিল আইএস-কে সন্ত্রাসীরা। সেই হামলায় ২৭ জন শিখ নিহত হয়েছিলেন, আহত হয়েছিলেন আরও বহুসংখ্যক।

এসএমডব্লিউ