ছবি: দ্য ইকোনমিক টাইমস

ডলারের বিপরীতে দরপতনের নতুন রেকর্ড করেছে ভারতীয় রুপি। বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে ১ ডলারের বিপরীতে রুপির মান ৭৭ দশমিক ৮১-তে পৌঁছেছিল বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

কিছু সময় গড়ানোর পর অবশ্য রুপির মানের খানিকটা উন্নতি হয়। ভারতের মুদ্রাবাজারে এখন ১ ডলারের বিপরীতে রুপির মান ৭৭ দশমিক ৭৯। এর আগে ভারতের ইতিহাসে ডলারের বিপরীতে রুপির সর্বনিম্ন মান পৌঁছেছিল ৭৭ দশমিক ৭৫-এ। চলতি বছর ১৭ মে এই রেকর্ড ছুঁয়েছিল দেশটি।

এদিকে, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার ভারতের মুদ্রাবাজারে এ মুদ্রাটি  রীতিমতো দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বিদেশি মুদ্রা বিনিময় (ফরেন মানি এক্সচেঞ্জ) ব্যাবসার সঙ্গে যুক্ত একটি ভারতীয় ব্যাংকের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘আপাতত কেবল কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার কেনাবেচা করছে। বাজারের অস্থিরতা রোধ করতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’

‘তবে এর মাধ্যমে সাময়িকভাবে বাজার শান্ত থাকলেও শেষ রক্ষা হবে না। সামনের দিনে রুপির মান আরও কমবে।’

ভারতের মুদ্রাবাজার বিষয়ক একাধিক বিশ্লেষকের মতে, করোনা মহামারিজনিত কারণে দীর্ঘ অর্থনৈতিক স্থবিরতা ও আন্তর্জাতিক বাজারে দ্রব্যমূল্যে ঊর্ধ্বগতির কারণে এটি কমবেশি প্রত্যাশিত ছিল যে, চলতি অর্থবছর ২০২১-২২ সাল থেকেই ডলারের বিপরীতে রুপির দরপতন শুরু হবে এবং আগামী অর্থবছর—২০২২-২৩ সালের শেষ নাগাদ প্রতি ১ ডলারের বিনিময়ে মিলবে ৭৯ রুপি।

কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়তে থাকায় প্রত্যাশিত সময়ের অনেক আগেই ভারতের মুদ্রাবাজারে ডলারের দামে ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

গত ১৩ সপ্তাহ ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়ছে অপরিশোধিত তেলের দাম। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, চীনের বিভিন্ন প্রদেশে লকডাউন থাকার কারণে এখন এই মূল্যবৃদ্ধি ধীরে ধীরে ঘটছে; যেদিন দেশটি লকডাউন শিথিল করবে, সেদিন থেকে বাজারে হু হু করে বাড়বে অপরিশোধিত তেলের মূল্য।  

ভারত তার প্রয়োজনের ৮৫ শতাংশ জ্বালানি তেল আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমদানি করে। অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়ায় দেশটিতে প্রায় সব পণ্য ও পরিষেবার মূল্য বেড়েছে। ফলে দিন দিন দেশটিতে বাড়ছে অভ্যন্তরীণ মুদ্রাস্ফীতির হার।

বোঝার ওপর বিড়ম্বনার মতো সম্প্রতি পতন হয়েছে ভারতের শেয়ারবাজরেও। বৃহস্পতিবার দেশটির শেয়ারবপাজারে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম পড়ে গেছে। জাতীয় অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতের বিনিয়োগকারীরা উদ্বেগে রয়েছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

এসএমডব্লিউ