আইএসআইকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে তোপের মুখে শেহবাজ
পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্সকে (আইএসআই) সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর নজরদারির এক্তিয়ার দিয়ে নিজ দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) ও জোটসঙ্গীদের তোপের মুখে পড়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহাবাজ শরিফ।
গত শুক্রবার আইএসআইকে স্পেশাল ভেটিং এজেন্সির (এসভিএ) মর্যাদা দেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। এই মর্যাদার ফলে এখন থেকে পাকিস্তানের বেসামরিক সরকারি কর্মকর্তাদের নৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়সমূহ আইএসআইয়ের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকবে; এবং এখন থেকে কর্মকর্তাদের পদায়ন, নিয়োগ, পদন্নোতির ক্ষেত্রে আইএসয়ের পর্যবেক্ষণ ও প্রতিবেদনকে আবশ্যিক হিসেবে গণ্য করা হবে।
বিজ্ঞাপন
পাকিস্তানের ক্ষমতা কাঠামোতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকা আইএসআই প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫০ সালে। দেশটির সামরিক বাহিনীর এই গোয়েন্দা সংস্থা একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, রাজনীতি ও পররাষ্ট্রনীতি নিয়ন্ত্রণ করে।
অভিযোগ উঠেছে, শুক্রবার এই ঘোষণা দেওয়ার আগে নিজের জোটসঙ্গী তো দূর— দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গেও এ বিষয়ে কোনো আলোচনা করেননি শেহবাজ শরিফ।
পাকিস্তানে বর্তমান ক্ষমতাসীন জোট সরকারের অন্যতম শরিক পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) জেষ্ঠ্য নেতা মিয়া রাজা রব্বানি প্রধানমন্ত্রীর এ পদক্ষেপকে ‘বিস্ময়কর’ উল্লেখ করে দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আফগানিস্তান পরিস্থিতি, কাশ্মির, অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদ ও অন্যান্য বিভিন্ন ইস্যুতে আমাদের বেসামরিক প্রশাসন এমনিতেই চাপের মধ্যে রয়েছে। এই সিদ্ধান্তের কারণে তাদের ওপর চাপ আরও বাড়বে।’
‘তাছাড়া বেসামরিক ও সামরিক প্রশসানের মধ্যে যে ভেদরেখা রয়েছে তা আরও অস্পষ্ট হবে এবং সামরিক প্রশাসনের হস্তক্ষেপের কারণে বেসামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে হতাশা দেখা দেবে।’
‘সর্বোপরি, এই পদক্ষেপের কোনো প্রয়োজন ছিল না। বেসামরিক কর্মকর্তাদের যাচাইয়ের জন্য সেন্ট্রাল সিলেকশন বোর্ডের (সিএসবি) গোয়েন্দা সংস্থাই যথেষ্ট ছিল।’
পিপিপির মহাসচিব ফারহাতুল্লাহ বাবর এক টুইটবার্তায় এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানানোর পাশাপাশি জোটের সব শরিককে এ বিষেয় আনুষ্ঠানিকভাবে আপত্তি জানানোর আহ্বান করেছেন।
টুইটবার্তায় বাবর বলেন, ‘অ্যাবোটাবাদে ওসামা বিন লাদেনের আত্মগোপনের খবর যে সংস্থা জানতে পারেনি, তারা কতখানি দক্ষ— তা নিয়ে আমার এবং আমার মতো অনেকেরই গভীর সংশয় রয়েছে।’
‘প্রধানমন্ত্রীর এই পদক্ষেপ একেবারেই অগ্রহণযোগ্য এবং আমার মতে, বর্তমান জোট সরকারের সবার উচিত— এ বিষয়ে আপত্তি জানানো।’
পিএমএলএনের জ্যেষ্ঠ নেতা ও বর্তমান সরকারের তথ্যমন্ত্রী পারভেজ রশিদও আপত্তি জানিয়েছেন এক টুইটে। তিনি বলেছেন, ‘যদি আইএসআই পাকিস্তানের বেসামরিক কর্মকর্তাদের ওপর নজরদারি করার এক্তিয়ার পেয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে অবশ্যই এই গোয়েন্দা সংস্থাকে পার্লামেন্টের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকতে হবে।’
এসএমডব্লিউ