ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেনকে দূরপাল্লার রকেট সিস্টেম সরবরাহ করে, সেক্ষেত্রে দেশটিতে রুশ বাহিনী আরও কঠোর হামলা চালাবে বলে পশ্চিমা বিশ্বকে সতর্ক করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

শনিবার রাশিয়ার সরকারি টেলিভিশন রোশিয়া-১ কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে দেশটির বৃহত্তম বার্তাসংস্থা তাস নিউজ এজেন্সি।

সাক্ষাৎকারে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যদি ইউক্রেনকে দূরপাল্লার রকেট সিস্টেম দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে সেখানে রুশ বাহিনীর হামলা আরো কঠোর ও ব্যাপক হবে। ইউক্রেনের যেসব লক্ষ্যবস্তুতে এখনও আমরা হামলা করিনি, সেসব ধ্বংস করে দেওয়া হবে।’

পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণা দেওয়ার দু’দিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।

বুধবার ১০১ তম দিনে পৌঁছেছে ইউক্রেনে রুশ সেনাদের অভিযান। ইতোমধ্যে দেশটির দুই বন্দর শহর খেরসন ও মারিউপোল, দনেতস্ক প্রদেশের শহর লিয়াম এবং মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ার আংশিক এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে রুশ বাহিনীর হাতে।

বর্তমানে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লুহানস্কের সেভারদনেতস্ক শহরে ইউক্রেন সেনাদের সঙ্গে তীব্র সংঘাত চলছে রুশ বাহিনীর।

চলমান যুদ্ধে সামরিক সহায়তা হিসেবে মাস খানেক আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে উন্নত দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণকারী অস্ত্র মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম (এমএলআরএস) চেয়েছিল ইউক্রেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সদর দপ্তর পেন্টাগন এই আবেদনে সাড়া দিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়, ইউক্রেনকে এমএলআরএসের পরিবর্তে অপর একটি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণকারী অস্ত্র হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম (এইচআইএমএআরএস) পাঠানো হবে।

তারপর ২ জুন হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিশ্চিত করেন, ইউক্রেনে নতুন আরও ৭০ কোটি ডলার সামরিক সহায়তা প্যাকেজ দেওয়া হবে এবং এই প্যাকেজের মধ্যে হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেমও অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।

একই দিন পৃথক এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ও পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ বলেন, ‘ইউক্রেনীয়রা আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, এই অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালানো হবে না এবং রাশিয়ার সীমানার ভেতর কোনো স্থাপনাকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হবে না। কেবল নিজেদের আত্মরক্ষার জন্য এই অস্ত্র ব্যবহার করা হবে বলে নিশ্চয়তা দিয়েছে কিয়েভ।’

তবে এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হয়নি মস্কো। গত ৩ জুন রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের মুখপাত্র ও প্রেস সেক্রেটারি দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের ওপর আস্থা রাখতে পারছি না, কারণ অতীতে বিভিন্ন ইস্যুতে প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা থেকে সরে আসার রেকর্ড রয়েছে তার। একাধিক বার এমন ঘটনা ঘটেছে।’

এসএমডব্লিউ