রাস্তা দিয়ে হাঁটছে ইউক্রেনীয় সেনারা। পাশেই একটি মাঠে রুশ হামলার পর ধোয়া উঠতে দেখা যায়। দোনেতস্ক অঞ্চল থেকে ছবিটি গত ৩১ মে তোলা

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাসের সিভিয়েরোদোনেতস্ক শহরের কেন্দ্রে পৌঁছেছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। বুধবার (১ জুন) রুশ সেনারা শহরটির কেন্দ্রে পৌঁছায়। অবশ্য এরপরও শহরটির রাস্তায় ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের সঙ্গে তাদের লড়াই অব্যাহত ছিল।

মূলত কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই শিল্পনগরীর কেন্দ্রস্থলে পৌঁছানোর মাধ্যমে চলমান সামরিক অভিযানে পূর্ব ডনবাস অঞ্চলে বড় পুরস্কারের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে রুশ সামরিক বাহিনী। বৃহস্পতিবার (২ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

এদিকে রাশিয়ার সামরিক অভিযান মোকাবিলায় ইউক্রেনের জন্য ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের নতুন অস্ত্র সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সহায়তার মধ্যে ৮০ কিলোমিটার (৫০ মাইল) দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আঘাত করতে সক্ষম উচ্চ গতিশীল আর্টিলারি রকেট সিস্টেমও ইউক্রেনে সরবরাহ করছে দেশটি।

মূলত শক্তিশালী বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনীয় সেনারা যাতে রাশিয়ান লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে পারে সে জন্যই এই অস্ত্র পাঠাচ্ছে ওয়াশিংটন। তবে অত্যাধুনিক এই অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালাতে পারবে না ইউক্রেন। এমন শর্তেই কিয়েভকে এই অস্ত্র দিয়েছে দেশটি।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, রাশিয়ার অভ্যন্তরে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার জন্য উচ্চ গতিশীল আর্টিলারি রকেট সিস্টেমগুলো ব্যবহার করবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইউক্রেন। মূলত যুদ্ধ অবসানে ইউক্রেনকে আলোচনার টেবিলে সর্বোচ্চ সুবিধা দেওয়ার জন্য পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিকে উল্লেখযোগ্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করছে বাইডেন প্রশাসন।

রয়টার্স বলছে, সিভিয়েরোদোনেতস্ক শহরের চারপাশে কয়েকদিনের প্রচণ্ড লড়াইয়ের পর বুধবার শহরের কেন্দ্রস্থলে প্রবেশ করেছে রাশিয়ার সেনারা। ইউক্রেন বলছে, শহরের প্রায় ৭০ শতাংশ বর্তমানে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ এই শিল্পনগরীর বেশিরভাগই রুশ বোমা হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ওলেক্সান্ডার মোতুজিয়ানিক এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘শত্রুরা সিভিয়েরোদোনেতস্কের কেন্দ্রে প্রবেশ করেছে এবং সেখানে অবস্থান করার চেষ্টা করছে।’

বার্তাসংস্থাটি বলছে, রাশিয়া যদি সিভারস্কি ডোনেটস নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত এই শহরটি এবং এর পার্শ্ববর্তী ছোট শহর লিসিচানস্ক দখল করে নেয় তবে মস্কো লুহানস্কের পুরোটাই দখল করতে সক্ষম হবে। মূলত লুহানস্ক হচ্ছে ডনবাসের দু’টি প্রদেশের একটি যা রাশিয়া বিচ্ছিন্নতাবাদীদের রক্ষার নামে দখলের জন্য হামলা চালাচ্ছে।

এছাড়া লুহানস্ককে সম্পূর্ণরূপে দখল করার মাধ্যমে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অন্যতম প্রধান একটি লক্ষ্য পূরণ হবে বলেও জানিয়েছে রয়টার্স।

টিএম