ভারতে সিভিল সার্ভিস (আইএএস) পরীক্ষায় পাসের পর স্বপ্নের চাকরি পেয়েছেন অরুণা। কিন্তু সেই আনন্দের মধ্যেও যেন বার বার এক যন্ত্রণা ঘিরে ধরছে তাকে। খুব মনে পড়ছে বাবার কথা। তাদের পাঁচ ভাইবোনের পড়াশোনার খরচ চালাতে গিয়ে ধার-দেনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছিলেন বাবা। শেষ পর্যন্ত চাপ সহ্য করতে না পেরে ২০০৯ সালে আত্মহত্যা করেন তিনি।

কিন্তু অরুণা আজ আইএএস অফিসার হয়েছেন। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে তার মেধাক্রম ৩০৮। এমন আনন্দের মুহূর্তে দেশটির একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অরুণার আক্ষেপ, ‘এই দিনটা দেখে যেতে পারল না বাবা।’ পাঁচবার ব্যর্থ হয়েও ষষ্ঠবার সফল হয়েছেন তিনি। অরুণার বাবা চেয়েছিলেন, মেয়েরা স্বাবলম্বী হবে। ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (ইউপিএসসি) পরীক্ষায়  পাস করে স্বপ্নের চাকরিতে যোগ দেবে। কিন্তু সংসারের অনটনের কারণে তখন যেকোনও কাজই অরুণাদের কাছে প্রয়োজনীয় ছিল।

দেশটির দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকের টুমকুর জেলার বাসিন্দা অরুণা। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সময়েই তার বাবা আত্মহত্যা করেন। অরুণা বলেন, ‘আমার কোনও স্বপ্ন ছিল না ইউপিএসসি পরীক্ষা নিয়ে। আমি মাসে ১০-১৫ হাজার টাকা আয় করার মতো কাজেই সন্তুষ্ট ছিলাম। কিন্তু বাবার মৃত্যুই আমার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেয়। আমার স্বপ্ন গড়ে দেয়। বাবার ইচ্ছা পূরণ করার চেষ্টায় নিজেকে সম্পূর্ণ সঁপে দিয়েছিলাম।’

২০১৪ সালে প্রথমবার ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসেছিলেন অরুণা। তার পর আরও চারবার। কিন্তু কোনও বারই সফল হতে পারেননি। তবে ষষ্ঠবার আর ফিরে তাকাতে হয়নি অরুণাকে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে সংরক্ষিত আসনের কোনও সুবিধাই নেননি তিনি। অসংরক্ষিত আসনের পরীক্ষার্থী হিসেবে আবেদন করেছিলেন।

তাকে কোন পদ দেওয়া হবে, তা নিয়ে চিন্তিত নন অরুণা। তার কথায়, ‘আমাকে যে পদই দেওয়া হোক না কেন, আমি মনে করি সব পদেরই সমান ক্ষমতা রয়েছে। তবে বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি, এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় পাওয়া।’ আনন্দবাজার।

এসএস