ছবি: রয়টার্স

গত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে বন্ধ থাকা মারিউপোল সমুদ্রবন্দর অবশেষে খুলেছে। সোমবার ধাতব পাত বোঝাই একটি জাহাজ ছেড়ে গেছে উপকূলীয় মারিউপোলের বন্দর থেকে।

ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা প্রদেশ দনেতস্কের শীর্ষ নেতা ডেনিস পুশিলিন মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন। সোমবার পোস্ট করা সেই বার্তায় পুশিলিন বলেন, ‘আজ আড়াই হাজার টন ধাতব পাতবাহী একটি জাহাজ মারিউপোল বন্দর ছেড়ে গেছে।’

বন্দর কর্তৃপক্ষের এক মুখপাত্র রুশ সংবাদমাধ্যম তাস নিউজ এজেন্সিকে জানিয়েছেন, মারিউপোল বন্দর থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরের রুশ শহর রোস্তভ অব ডনের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া সেই জাহাজটিতে ২ হাজার ৭০০ টন ধাতব পাত রয়েছে।

তবে কোথা থেকে এসেছে এসব ধাতব পাত — সে সম্পর্কে কোনো মন্তব্য তিনি করতে চাননি বলে জানিয়েছে তাস।

এদিকে, বন্দর থেকে ধাতব পাত বোঝাই জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার ঘটনাকে ‘ছিনতাই’ বলে উল্লেখ করেছে ইউক্রেনের সরকার।

ইউক্রেন সরকারের মানবাধিকার ন্যায়পাল ল্যুদমিলা দেনিসোভা বলেছেন, চালানটির মাধ্যমে ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার লুট করা মালামাল রাশিয়ায় পাঠানো শুরু করেছে রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা।

টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে দেনিসোভা লিখেছেন, ‘ইউক্রেনের অস্থায়ীভাবে দখলকৃত অঞ্চলগুলোতে লুটপাট অব্যাহত রয়েছে। শস্য চুরির পরে দখলকারী আগ্রাসী বাহিনী মারিউপোল থেকে ধাতব পণ্য লুটে নিতে শুরু করেছে।’

ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের শুরু থেকেই রুশ বাহিনীর কাছে কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল দেশটির উপকূলীয় শহর মারিউপোল। ইউক্রেনের যেসব অঞ্চলে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে রুশ বাহিনীর সবচেয়ে বেশি সংঘাত হয়েছে, সেসবের মধ্যে আজভ সাগরের তীরবর্তী এই শহরটি ছিল অন্যতম।

এপ্রিল মাসেই মারিউপোল শহরের অধিকাংশ এলাকা দখলে নিয়ে এসেছিল রুশ বাহিনী। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল শহরটির প্রান্তে অবস্থিত আজভস্থাল ইস্পাত কারখানা। সাবেক সোভিয়েত আমলে প্রায় ৫ মাইল এলাকাজুড়ে প্রতিষ্ঠিত এই কারখানাটি ছিল ইউক্রেনীয় বাহিনীর সবচেয়ে শক্তিশালী ঘাঁটি।

রুশ বাহিনীর সঙ্গে কয়েক সপ্তাহ যুদ্ধের পর সরকারের নির্দেশ মেনে গত ১৬ মে রুশ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন কারখানায় অবস্থান নেওয়া ইউক্রেনীয় সেনারা।

মারিউপোলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ফলে আজভ সাগর উপকূলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এখন মস্কোর হাতে চলে এসেছে। দীর্ঘদিন ধরেই সেতু তৈরির মাধ্যমে ক্রিমিয়া দ্বীপের সঙ্গে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করতে চাইছিল মস্কো, মারিউপোলের দখল পাওয়ার পর তা এখন বাস্তবায়নে কোনো বাধা নেই। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দখলে নেয় রাশিয়া।

এসএমডব্লিউ