ছবি: আলজাজিরা

ফ্রান্সের লুভ্যর জাদুঘরে সংরক্ষিত চিত্রকর্ম মোনালিসার দিকে কেক ছুড়ে মেরেছেন এক দর্শনার্থী। অবশ্য তাতে চিত্রিকর্মটির কোনো ক্ষতি হয়নি। চিত্রকর্মটির সুরক্ষার জন্য সম্মুখভাগের লাগানো কাঁচের ঢাকনায় লেগেছে সেই কেকের টুকরো।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাকারী একজন পুরুষ, বয়স ৩০ কিংবা তার কিছু কম। বয়স্ক এক নারীর ছদ্মবেশ নিয়ে হুইল চেয়ারে করে ল্যুভর জাদুঘরে এসেছিলেন তিনি।

জাদুঘরে এসে ঘুরে দেখতে দেখতে মোনালিসার চিত্রকর্মটির সামনে এসে হঠাৎ হুইল চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ান তিনি, তারপর সেই চিত্রকর্ম লক্ষ্য করে পেস্ট্রি কেক ছুড়ে মারেন। তার পরপরই জাদুঘরের গ্যালারির দিকে গোলাপও ছোড়েন তিনি।

নিরাপত্তারক্ষীরা এ সময় সেই যুবককে আটক করে নিয়ে যান। তার নাম-পরিচয়-হামলার উদ্দেশ্য ইত্যাদি বিষয়ে সংবাদমাধ্যমগুলোকে বিস্তারিত তথ্য দিতে সম্মত হয়নি জাদুঘর কর্তৃপক্ষ।

তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, নিরাপত্তারক্ষীরা যখন ওই যুবককে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন তিনি চিৎকার করে ফরাসি ভাষায় বলছিলেন, ‘পৃথিবীর কথা ভাবুন, মানুষ পৃথিবী ধ্বংস করে দিচ্ছে। জাদুঘরের প্রতিটি শিল্পকর্ম বলছে— এ পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এ কারণেই আমি এমন করেছি।’

বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা চিত্রকর্ম মোনালিসার স্রষ্টা ইউরোপের রেনেসাঁ যুগের ইতালীয় শিল্পী লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি। ১৫০৩ সাল থেকে ১৫০৬ সালের মধ্যে কোনো এক সময়ে পর্যন্ত এই পোট্রেটের কাজ করেছেন তিনি।

মোনালিসার ছবির সবচেয়ে বড় বিশেষত্ত্ব ছবিতে থাকা নারীর ছবির চাহনি ও রহস্যময় হাসি। অধিকাংশ শিল্প-গবেষকের ধারণা, ১৫ শতকের শেষ ও ১৬ শতকের শুরুর দিকে তৎকালীন ইতালির ফ্লোরেন্স নগররাজ্যে বাস করা ব্যবসায়ী ফ্রান্সিসকো দ্য গিওকন্ডোর স্ত্রী লিসা গারদিনিই মোনালিসা চিত্রকর্মের মডেল হয়েছিলেন।  

অষ্টাদশ শতক থেকে ফ্রান্সের ল্যুভর জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে এই চিত্রকর্ম।

অবশ্য মোনালিসার ওপর এই প্রথম হামলা ঘটল— এমন নয়। ১৯১১ জাদুঘরের এক কর্মচারি এই চিত্রকর্মটি চুরি করেছিলেন। তারপর ১৯৫৬ সালে এক দর্শনার্থী ছবিটি লক্ষ্য করে পাথর ছুড়ে মেরেছিলেন। তারপর থেকেই ছবিটির সামনে বুলেটপ্রুফ কাঁচের সুরক্ষা বলয়ের ব্যবস্থা করে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ।

সূত্র: আলজাজিরা

এসএমডব্লিউ