নেপালের তারা এয়ারের নিখোঁজ দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট ৯-এনএইটি যাত্রীবাহী বিমানের সন্ধান মিলেছে। রোববার সকালের দিকে দেশটির পার্বত্যাঞ্চলীয় মুসতাং জেলায় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে দেশটির বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, মুসতাংয়ের কোওয়াং গ্রামের কাছে বিধ্বস্ত বিমানটির সন্ধান পাওয়া গেছে।

ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রধান কর্মকর্তা বলেছেন, বিমানের আরোহীদের ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। তারা বেঁচে আছেন কি না সেটি এখনও নিশ্চিত নয়। তবে দুর্ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে দেশটির সেনাবাহিনী বলেছে, তারা এয়ারের বিমানটি মুসতাং জেলার মানপতি হিমালের লামচে নদীর মুখে বিধ্বস্ত হয়েছে। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র নারায়ণ সিলওয়াল বলেছেন, স্থল এবং আকাশ পথ ব্যবহার করে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে সেনাবাহিনী।

এর আগে, রোববার সকালের দিকে ৪ ভারতীয়, তিন জাপানি নাগরিকসহ ২২ আরোহীকে নিয়ে তারা এয়ারের ৯৯-এনএইটি বিমানটি নিখোঁজ হয়। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, পোখারা থেকে জমসমের উদ্দেশে উড্ডয়নের ১০মিনিট পর সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটের দিকে বিমানটির সঙ্গে রাডারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তে বিমানটি মুসতাং জেলার লেতে এলাকার আকাশে ছিল।

মুসতাংয়ের প্রধান জেলা কর্মকর্তা নেত্র প্রসাদ শর্মা টেলিফোনে এএনআইকে নিশ্চিত করে বলেছেন, বিধ্বস্ত হওয়ার আগে বিমানটি মুসতাংয়ের জমসমের আকাশে ছিল এবং তারপরে মাউন্ট ধৌলাগিরির দিকে মোড় নেয়। এরপর বিমানটির সঙ্গে রাডারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, বিমানটি মুসতাং জেলার লেতের তিতি এলাকায় বিধ্বস্ত হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। মুসতাং পুলিশের কর্মকর্তা রাম কুমার দানি বলেছেন, তিতির স্থানীয় বাসিন্দারা টেলিফোন করে আমাদের জানিয়েছেন যে তারা বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তল্লাশি অভিযান চালানোর জন্য আমরা একটি হেলিকপ্টার মোতায়েন করেছি।

নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ফনিন্দ্র মণি পোখরেল বলেছেন, নিখোঁজ বিমানের সন্ধানে অভিযান চালানোর জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মুসতাং এবং পোখারায় দুটি হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে। নেপাল সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারও তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে।

তিব্বতের মুনতান থেকে মুসতাং শব্দের উৎপত্তি; যার অর্থ উর্বর সমতল। নেপালের ঐতিহ্যবাহী এই অঞ্চলটি মূলত বেশির ভাগ সময় শুষ্ক থাকে। ধৌলাগিরি এবং অন্নপূর্ণা পর্বতমালার মধ্যবর্তী তিন মাইল খাঁড়া নিচে অবস্থিত বিশ্বের গভীরতম গিরিখাতটিও এই জেলার মধ্য দিয়ে চলে গেছে।

এসএস