সাবেক পাক মানবাধিকার মন্ত্রীকে পুলিশের মারধরের পর গ্রেপ্তার
পাকিস্তানের সাবেক মানবাধিকারবিষয়ক মন্ত্রী ও সদ্য-ক্ষমতাচ্যুত ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা শিরিন মাজারিকে মারধরের পর পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। শনিবার সাবেক মন্ত্রীর মেয়ে ইমান জয়নব মাজারি-হাজির এক টুইট বার্তায় এই তথ্য জানিয়েছেন।
জয়নব বলেছেন, ‘আমাকে শুধু বলা হয়েছে যে, লাহোর দুর্নীতি দমন শাখা তাকে নিয়ে গেছে।’ পাকিস্তানের দুর্নীতি দমন সংস্থার পক্ষ থেকে শিরিনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার তথ্য দেশটির সংবাদমাধ্যম ডনকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
কোহসার থানার বাইরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন মন্ত্রীর মেয়ে ইমান। এ সময় তাকে বিচলিত দেখা যায়। মায়ের আটকের ঘটনাকে ‘অপহরণ’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘তাকে অপহরণ করা হয়েছে। আমি বলবো না তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যখন কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়, তখন কোন অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে তা পুলিশ অবগত করে।’
ইমান জয়নব বলেছেন, আমি জানি না তিনি (মন্ত্রী শিরিন মাজারি) কোথায় আছেন। এই সরকার তাকে বলপ্রয়োগপূর্বক গুম করেছে। কারণ তারা মনে করে নারীরা সফট টার্গেট।
তিনি আরও বলেন, আমার মায়ের কিছু হলে আমি কাউকে ছাড় দেব না। এরপর তিনি ঘটনাস্থল থেকে চলে যান এবং পিটিআইয়ের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন।
পাকিস্তানের আর্থিক দুরবস্থা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে গত ৮ মার্চ অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী দলগুলো। তবে এ প্রস্তাবকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে ৩ এপ্রিল তা খারিজ করে দেন দেশটির জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি।
সেদিনই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এ পরিস্থিতিতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নোটিশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। টানা পাঁচ দিন শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্ট ৭ এপ্রিল অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ এবং জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেন এবং অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোট আয়োজনের নির্দেশ দেন।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা মেনে দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের স্পিকার আসাদ কায়সারের সভাপতিত্বে ৯ এপ্রিল সাড়ে ১০টায় অধিবেশন শুরু হয়। দিনভর চলে নাটকীয়তা। কয়েক দফায় অধিবেশন স্থগিত করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারবেন না জানিয়ে রাতে পদত্যাগ করেন জাতীয় পরিষদের স্পিকার আসাদ কায়সার। পরে স্পিকারের আসনে বসেন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সদস্য আয়াজ সাদিক। তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভোটে ইমরান খানের দল পিটিআই ত্যাগী আইনপ্রণেতারা বিরোধীদের পক্ষে ভোট দেওয়ায় ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে বাধ্য হন সাবেক এই ক্রিকেট তারকা।
এসএস