বিমানে যাত্রীদের পবিত্র জমজম কূপের পানি বহনে সৌদি আরব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং ভারতের কিছু গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে। ইসলামি ক্যালেন্ডারের শেষ অর্থাৎ জিলহজ মাসে সারা বিশ্ব থেকে লাখ লাখ মুসলমান হজ পালনের জন্য মক্কায় যান, সেই হজের আগে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে খবরে বলা হচ্ছে।

সৌদি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জেনারেল অথরিটি অব সিভিল এভিয়েশনের (জিএসিএ) জারি করা হজ নির্দেশনার বিজ্ঞপ্তির বরাত দিয়ে খবর পরিবেশন করা হয়েছে। তবে বেশিরভাগ গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে হজ নির্দেশনার ১১ নম্বর পৃষ্ঠার ৬.৯ অনুচ্ছেদে উল্লিখিত নির্দেশের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি দাবি করা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ হজযাত্রীদের জমজমের পানি বহন নিষিদ্ধ করেছে এবং জেদ্দা অথবা সৌদি আরবের অন্য কোনও বিমানবন্দর দিয়ে ভ্রমণকারী যাত্রীদের কারও কাছে যাতে পবিত্র জমজমের পানি ভরা বোতল না থাকে তা নিশ্চিত করতে সব বিমান সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নতুন এই আদেশ লঙ্ঘন করলে সৌদি আরবে চলাচলকারী যে কোনও বিমান সংস্থার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

আসলেই কি জমজমের পানি বিমানে বহন নিষিদ্ধ করেছে সৌদি?

সৌদি আরবের জেনারেল অথরিটি অব সিভিল এভিয়েশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, হজের নির্দেশনায় জমজমের পানির ‌‘অনুমোদিত পরিমাণ’ হজযাত্রীরা বহন করার অনুমতি পাবেন বলে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের ইলেকট্রনিক পরিষেবার ‘অনুমোদিত পরিমাণ’ এবং পবিত্র মসজিদের জমজম প্রকল্পের কর্তৃপক্ষের উত্পাদিত পানি ছাড়া বিমান সংস্থাগুলোতে জমজমের পানি বহন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তির ৬.৯ অনুচ্ছেদে জমজমের পানি সংক্রান্ত নির্দেশনা রয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে জমজমের পানি যে পাত্রে নেওয়া হবে, সেটি অবশ্যই বিমানবন্দরের প্যাকেজিং কোম্পানির কাছে ভালোভাবে মোড়াতে হবে।

বিমানে জমজমের লজিস্টিকস সরবরাহ নিশ্চিত করতে সব এয়ারলাইন্সকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, হজ মৌসুম শেষ না হওয়া পর্যন্ত পবিত্র পানি বিমানবন্দরে ফেলে রাখা যাবে না।

সৌদির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যাত্রীরা জমজম কেবল পাঁচ লিটার পানির একটি বাক্স কেনার এবং চেক-ইন করার অনুমতি পাবেন। যা সৌদি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত প্যাকেজিং ব্যবস্থার মাধ্যমে মোড়াতে হবে।

সিদ্ধান্ত

বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং ভারতের কিছু গণমাধ্যমে সৌদি আরব জমজমের পানি বিমানে বহন নিষিদ্ধ করেছে বলে যে খবর প্রকাশ করেছে তা ভিত্তিহীন। মূলত সৌদির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের অনলাইন পরিষেবার মাধ্যমে জমজমের পানি বিমানে পরিবহনের অনুমতির জন্য হজযাত্রীদের আবেদন করতে হবে।

সেই আবেদনে মন্ত্রণালয় থেকে হজযাত্রীরা কতটুকু পানি বিমানে বহন করতে পারবেন তা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। সেই পরিমাণের বাইরে পানি বিমানে বহন করা যাবে না।

এসএস