২০১৯ সালে বিশ্বে বায়ু দূষণের কারণে প্রায় ৬৬ লাখেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণায় অনুমান করা হয়েছে যে, এই মৃত্যুর সংখ্যা ভারত সর্বোচ্চ ১.৬৭ মিলিয়ন। দূষণের কারণে ঘটা এ ধরনের অকাল মৃত্যুর ১৭.৮ শতাংশ হয়েছে ভারতেই। 

ল্যানসেট প্ল্যানেটারি হেলথের একটি সমীক্ষা অনুসারে, শেষ কয়েক বছরে নয় মিলিয়ন মানুষ দূষণের কারণে মারা গেছে। বিশ্বব্যাপী ছয়টি মৃত্যুর মধ্যে একটি হয়েছে বায়ু দূষণের কারণে। নতুন গবেষণার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর আগে পানি দূষণ ১.৩৬ মিলিয়ন অকাল মৃত্যুর জন্য দায়ী ছিল। সীসা এক্সপোজারের ফলে আরও ৯ লাখ ও বিষাক্ত পেশাগত ঝুঁকি থেকে আরও ৮ লাখ ৭০ হাজার অকাল মৃত্যু ঘটেছে। 

যা বলছে ল্যানসেটের প্রতিবেদন

ল্যানসেটের গবেষণায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ভারত গৃহস্থালী কাজকর্ম থেকে বায়ু দূষণের বিরুদ্ধে প্রচেষ্টা চালিয়েছে। বিশেষ করে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উজ্জ্বলা যোজনা কর্মসূচির মাধ্যমে ধোয়া কমানো গেছে। কিন্তু তারপরও বায়ু দূষণ সম্পর্কিত মৃত্যুর আনুমানিক সংখ্যা ভারতেই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি। ভারত দূষণের উৎসগুলোকে কমানোর জন্য যন্ত্র ও নিয়ন্ত্রক ক্ষমতা তৈরি করেছে। কিন্তু দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টা চালানোর জন্য ও উল্লেখযোগ্য উন্নতি অর্জনের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। ভারতের ৯৩ শতাংশ দূষণের পরিমাণ ১০এম/এমকিউ। 

জৈব্যবস্তু পোড়ানো দূষণের অন্যতম কারণ

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুসারে, ইন্দো-গাঙ্গেটিক সমভূমিতে বায়ু দূষণ সবচেয়ে গুরুতর। যেখানে ভূ-সংস্থান ও আবহাওয়াবিদ্যা শক্তি, গতিশীলতা, শিল্প, কৃষি এবং অন্যান্য কার্যকলাপ দূষণকে কেন্দ্রীভূত করে থাকে। ভারতে বায়ু দূষণের মৃত্যুর একক বৃহত্তম কারণ ছিল বিভিন্ন জৈববস্তু পোড়ানো, তারপরে কয়লা ও ফসল পোড়ানো। গড় পরিবেষ্টিত বায়ু দূষণের তালিকায় ভারতে ২০১৪ সালে ৯৫এমজি/এমকিউ শীর্ষে ছিল। ২০১৭ সালের মধ্যে ৮৫এমজি/এমকি এ হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি দেশটিতে আবার ধীরে ধীরে এটি কিছুটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

বায়ু দূষণের কারণে কার্ডিওভাসকুলার রোগ ভারতীয়দের

ভারতে বায়ু দূষণের কারণে ১.৬৭ মিলিয়ন মৃত্যুর মধ্যে বেশিরভাগ (০.৯৮ মিলিয়ন) পিএম২.ফাইভ দূষণের কারণে হয়েছিল। আরও ০.৬১ মিলিয়ন গৃহস্থালী বায়ু দূষণের কারণে হয়েছে। ল্যানসেটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের সর্বোচ্চ পরিবেষ্টিত পিএম২.ফাইভ মাত্রা - জনসংখ্যার ওজনের গড় নেপাল ছাড়া ভারতে দেখা যায়। পিএম২.ফাইভ দূষণ বলতে অতি-সূক্ষ্ম কণার উচ্চ ঘনত্বকে বোঝায় যা সাধারণত কোনো কিছু পোড়ানোর সময় নির্গত হয়। কণাগুলো ফুসফুসের গভীরে পৌঁছাতে এবং রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়, যার কারণে কার্ডিওভাসকুলার রোগ হয়ে থাকে।

ওএফ