মমতাজের সমাধিস্থলে ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে ‘তাজমহল’ বানিয়ে ইতিহাসে চির অমর হয়ে আছেন পঞ্চম মুঘল সম্রাট শাহজাহান। সেই তাজমহল নিয়ে এ বার মামলা জমা পড়ল উত্তরপ্রদেশে।

তাজমহলে তালাবন্ধ থাকা ‘২২টি ঘর’ খোলার আবেদন জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। সেই সঙ্গে এই সৌধে কোনো মন্দির ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত দল গঠন করার আবেদন জানানো হয়েছে।

শনিবার ইলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চের রেজিস্ট্রিতে এ আবেদন দাখিল করেন বিজেপির অযোধ্যা শাখার মিডিয়া ইনচার্জ রজনীশ সিংহ।

রোববার সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের কাছে রজনীশ বলেন, আদালতের কাছে আবেদনে তাজমহলের ২২টি বন্ধ ঘর খোলার আর্জি জানিয়েছি। সত্য যা-ই হোক, তা প্রকাশ্যে আসা উচিত।

প্রসঙ্গত, তাজমহল আসলে ‘তেজো মহালয়’ নামে একটি শিব মন্দির বলে দাবি উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর। আবেদনে বলে হয়েছে, ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)-এর অধীনস্থ এই সৌধের ইতিহাস জানতে একটি তদন্ত দল প্রতিবেদন পেশ করুক।

জানা যায়, মমতাজ মহলের সমাধিসৌধ তাজমহলে নাকি বহু ঘর তৈরি করেছিলেন শাহজহান। তার মধ্যে মূল সামধিমন্দিরের তলায় থাকা ২২টি ঘর নাকি লোকচক্ষুর আড়ালে রয়ে গেছে বহুকাল ধরেই।

তাজমহলের উত্তর দিকে লাল স্যান্ডস্টোনের বড় প্ল্যাটফর্ম থেকে দু’টি সিঁড়ি নেমে গেছে নিচে। সেখানে আছে ১৭টি কুঠুরি। সেগুলো বন্ধ। এর নিচে রয়েছে একটি অলিন্দ। সেই অলিন্দ ঘুরে গিয়ে পৌঁছেছে মূল সমাধিস্থলের নিচে।

বিশ্লেষকদের মতে, পাথরের তৈরি ঘরগুলোতে বেশি মানুষজনের ভিড় হলে তাদের নিশ্বাস থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইডের সংস্পর্শে এসে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় মূল কাঠামোর শ্বেতপাথরের ক্ষতি হতে পারে। সে কারণেই ওই ঘরগুলি বন্ধ করে রাখা হয়েছে।

২০১৭ সালে একই দাবি নিয়ে বিজেপি নেতা বিনয় কাটিয়ার মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের দ্বারস্থ হন। সম্প্রতি অযোধ্যার ছাবনি এলাকার সাধু পরমহংসাচার্য মহারাজ ও তাঁর ৩ শিষ্যকে তাজমহলে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। যোগীরাজ্যের ওই সন্ন্যাসীর দাবি ছিল, তাজমহল আদতে 'তেজো মহালয়।' 

উত্তরপ্রদেশে বারাণসীর বিশ্বনাথ মন্দির লাগোয়া জ্ঞানবাপী মসজিদ এবং কৃষ্ণ জন্মভূমি মথুরার শাহি মসজিদ নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। সেই তালিকায় তাজমহলের নাম জুড়ে যাওয়ার পর, যোগীরাজ্যে ইসলামী স্থাপত্য ঘিরে বিতর্ক নতুন মাত্রা পেল। 

এসএম