ইরানে বিষাক্ত মদ পান করে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে; এবং অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন আরও ১৯ জন। অসুস্থদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

মৃতদের মধ্যে নয়জন পুরুষ ও একজন নারী। ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর বন্দর আব্বাসে ঘটেছে এই ঘটনা।

অসুস্থ ব্যক্তিদেরকে শহরের হরমোজগান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে জানিয়েছেন হাসপাতালের মুখপাত্র ফাতেমেহ নওরুজিয়ান।

আল জাজিরাকে তিনি বলেন, ‘ঈদুল ফিতর ও তার পর মদপানজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন মোট ৭৫ জন। তাদের মধ্যে ১০ জন মারা গেছেন, ৪৫ জনকে ডায়ালিসিস করতে হয়েছে।’

‘বেশ কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ১৯ জন এখনও চিকিৎসাধীন আছেন এবং তাদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা গুরুতর।’

মুসলিম অধুষিত দেশ ইরানে মদ তৈরি, বিক্রয় ও পান কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। কেবল দেশটিতে বসবাসরত অমুসলিম সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে মদ্যপানে শিথিলতা রয়েছে; কিন্তু কোনো মুসলিম ব্যক্তির যদি মদ্যপান, প্রস্তুত ও বিক্রির সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়—সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তিকে চাবুকপেটা করার বিধান আছে দেশটিতে।

তবে গোপনে অনেকেই মদ তৈরি, পান ও মদ বিক্রয় করে থাকেন ইরানে। বিদেশি বোতলজাত মদ দুর্লভ ও দামি হওয়ায় তাদের প্রধান ভরসা ঘরে তৈরি দেশি মদ। চলতি মাসে ঘরে মদ প্রস্তুত ও বিক্রয়ের অভিযোগে আট জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বিক্রির জন্য ঘরে চোরাইভাবে যারা মদ তৈরি করেন, অনেক সময় তারা মদে নেশার পরিমাণ বাড়াতে মিথানল ব্যবহার করেন, যেটি মূলত বিভিন্ন রাসায়নিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

মানবদেহের জন্য মিথানল খুবই বিপজ্জনক। এই রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত মদ পান করলে মৃত্যু, অন্ধত্ব কিংবা শরীরে যে কোনো প্রত্যঙ্গ চিরতরে নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

তবে সাম্প্রতিক এই রোগীরা মিথানল মিশ্রিত দেশি মদ পান করেছিলেন কি না, সে ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাননি ফাতেমেহ নওরুজিয়ান।

এসএমডব্লিউ