প্রতীকী ছবি

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় অশনি ‘ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে’ পরিণত হচ্ছে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)। ভারতীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষক এই সংস্থাটির মতে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন আন্দামান সাগরের গভীর নিম্নচাপটি রোববার (৮ মে) সকালে আরও শক্তিশালী হয়েছে।

রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম রিপাবলিক ওয়ার্ল্ড। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্দামান ও বঙ্গোপসাগরের ওপরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপই আগামী ১০ মে ঘূর্ণিঝড় রূপে উড়িষ্যা ও অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূল ঘেঁষে বয়ে যাবে। অর্থাৎ এটি উপকূলীয় এলাকায় আঁছড়ে পড়বে না। আর এটিই রাজ্য দু’টির উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের জন্য বড় স্বস্তির খবর।

আপাতত অতি গভীর-নিম্নচাপ হিসেবে ‘অশনি’ দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। ক্রমশ এটি পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর হয়ে পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগরের দিকে এগোবে। রোববার সন্ধ্যায় পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগরে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এরপর রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত এই ঘূর্ণিঝড় উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোবে। মঙ্গলবার সকালে এটি অন্ধ্রপ্রদেশ ও উড়িষ্যা উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছাবে। উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ এবং দক্ষিণ উড়িষ্যা উপকূল বরাবর এর প্রভাব থাকবে পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায়।

অন্ধ্রপ্রদেশ ও উড়িষ্যা উপকূলের স্থলভাগে ঝড়ো হাওয়ার গতিবেগ সর্বোচ্চ ৬০-৭০ কিলোমিটার হতে পারে। বুধবারের পর অশনি ক্রমশ সমুদ্রের গভীরে শক্তিক্ষয় করতে পারে। বুধবার পর্যন্ত এই ঘূর্ণিঝড়ের স্থলভাগের আঁছড়ে পড়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না আবহাওয়াবিদরা।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’র যে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে আসার সম্ভাবনা প্রায় নেই, সে কথা আগেই জানিয়েছিল রাজ্যটির মৌসম ভবন। রোববারও তারা জানিয়েছে, আপাতত ঘূর্ণিঝড়টি পুরী থেকে ১ হাজার ৩০ কিলোমিটার এবং বিশাখাপত্তনম থেকে ৯৭০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। মঙ্গলবার নাগাদ উড়িষ্যা কিংবা অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূল ছুঁতে পারে ‘অশনি’।

কিন্তু কোনো ঝুঁকি না নিয়ে আগাম সতর্কতা জারি করেছে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন মমতার সরকার। ‘অশনি’র জেরে হওয়া বৃষ্টিতে কৃষি জমি এবং ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় কৃষকদের জন্য সতর্কতা জারি করেছে পশ্চিমবঙ্গ। এছাড়া রাজ্যটির জেলাগুলোতে ১০-১৩ মে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবন।

সংবাদমাধ্যম বলছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবার আকাশ আংশিক মেঘলা থাকবে। মঙ্গলবার থেকে উপকূলীয় জেলাগুলোতে বৃষ্টি শুরু হতে পারে। কলকাতাতেও মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

কলকাতার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতেও মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে। বুধবার ও বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোতে বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি রয়েছে। উপকূলীয় জেলা পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় হালকা ঝড়ো বাতাস বইতে পারে। এছাড়া মঙ্গলবার থেকে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

টিএম