স্কুলভবনে হামলার পর উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন ইউক্রেনের জরুরি সেবার কর্মীরা

ইউক্রেনের একটি স্কুলে বোমা হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় লুহানস্ক অঞ্চলের বেলোগোরোভকা এলাকায় অবস্থিত এই স্কুলে চালানো হামলায় কয়েক ডজন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

লুহানস্কের গভর্নরও হামলার তথ্য নিশ্চিত করে বহু মানুষের প্রাণহানির শঙ্কার কথা জানিয়েছেন। রোববার (৮ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

লুহানস্ক অঞ্চলের গভর্নর সেরহি হাইদাই বলেছেন, বেলোগোরোভকা এলাকার একটি স্কুলে রাশিয়ার বোমা হামলার পর ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা কয়েক ডজন মানুষ সম্ভবত মারা গেছেন।

নিজের টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘হামলার পর স্কুল ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে ৬০ জন আটকা পড়েছেন এবং সম্ভবত তাদের সবাই প্রাণ হারিয়েছেন।’

সেরহি হাইদাই আরও বলেন, জরুরি সেবার কর্মীরা ৩০ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন। তাদের মধ্যে সাতজন আহত হয়েছেন। অবশ্য লুহানস্ক অঞ্চলের গভর্নরের এই দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি আলজাজিরা।

এদিকে ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক এই সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, বোমা হামলার পর স্কুল ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে দু’জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শনিবার যখন রাশিয়ান সামরিক বাহিনী স্কুলটিতে বোমাবর্ষণ করে তখন প্রায় ৯০ জন মানুষ সেখানে অবস্থান করছিলেন।

এদিকে ইউক্রেনের একটি জাদুঘরে বোমা হামলা চালিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছে রাশিয়া। প্রাচীন এক কবির নামে উৎসর্গকৃত এই জাদুঘরটি বিধ্বস্ত হওয়ার তথ্যটি নিশ্চিত করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, এ ঘটনায় তিনি বাকরুদ্ধ। ধ্বংস হয়ে যাওয়া ওই জাদুঘরটি ১৮ শতকের দার্শনিক এবং কবি হরিহোরি স্কোভোরোদার নামে উৎসর্গকৃত স্থাপনা।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।

মস্কো অবশ্য ইউক্রেনে তাদের এই আগ্রাসনকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলে আখ্যায়িত করছে। রাশিয়ার দাবি, ইউক্রেনকে নিরস্ত্র করা এবং পশ্চিমাদের উস্কে দেওয়া রুশ-বিরোধী জাতীয়তাবাদ থেকে দেশটিকে মুক্ত করতেই এই অভিযান চলছে বলেও দাবি করেছে রাশিয়া।

প্রায় আড়াই মাস ধরে চলা এই সামরিক অভিযানে রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনের সামরিক-বেসামরিক বহু অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উঠছে বেসামরিক প্রাণহানির অভিযোগও। যদিও সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করেই হামলা চলছে বলে বরাবরই দাবি করে আসছে মস্কো।

টিএম