এবার আফগান নারীদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হলো বোরকা
এবার আফগান নারীদের জন্য বোরকা বাধ্যতামূলক করা হলো। আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালিবানগোষ্ঠীর শীর্ষ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা ইতোমধ্যে এ বিষয়ক একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন।
তালিবান সরকারের ‘পূণ্যের প্রচার ও পাপ প্রতিরোধ’ মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র শনিবার বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘রাজধানী কাবুলসহ আফগানিস্তানের প্রত্যেক প্রদেশে এই ডিক্রি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।’
বিজ্ঞাপন
‘তালিবান মনে করে, আফগানিস্তানের নারীদের পর্দা রক্ষার জন্য আদর্শ হলো নীল রঙের বোরকা। ডিক্রিতেও সে বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে। আরও বলা হয়েছে, এই ডিক্রি কার্যকর হওয়ার পর যদি কোনো নারী তার মুখ ও সর্বাঙ্গ না ঢেকে বাড়ির বাইরে বের হন এবং যদি তার প্রমাণ পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে ওই নারীর পিতা, স্বামী বা ছেলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বর্তমান আফগানিস্তানের অধিকাংশ নারীই ধর্মীয় কারণে মাথায় স্কার্ফ বা হিজাব পরেন, তবে মুখঢাকা বোরকা ব্যবহার করেন না।
১৯৯৬ সালে যখন প্রথম দফায় আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসীন হয়েছিল তালিবানগোষ্ঠী, সেসময় নারীদের জন্য বোরকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। ২০০১ সালে মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনীর হামলায় পতন হয় তৎকালীন তালিবান সরকারের, তাদের অন্যান্য অনেক আইনের সঙ্গে এই আইনটিও সে সময় বিদায় নেয়।
ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হওয়ার ২০ বছর পর ২০২১ সালের আগস্টে ফের জাতীয় ক্ষমতায় আসীন হয় তালিবানগোষ্ঠী; এবং একে একে নিজেদের পুরনো সব নীতি ফিরিয়ে আনা শুরু করে।
এসব নীতির মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্যটি হলো নারীদের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বন্ধ করা। গত বছর তালিবানগোষ্ঠী ক্ষমতা দখলের পর থেকে বন্ধ আছে দেশটির মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক মেয়েস্কুলগুলো।
এছাড়া পুরুষ অভিভাবক ব্যতীত নারীদের ভ্রমণের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তালিবান।
নারীশিক্ষা ও ক্ষমতায়নের বিরুদ্ধে কট্টরপন্থী অবস্থান ও মানবাধিকার লঙ্ঘণের অভিযোগে বিশ্বজুড়েই তীব্র সমালোচনার মুখে আছে তালিবানগোষ্ঠী। বিশেষ করে মেয়েস্কুলগুলো বন্ধ রাখার কারণে বৈশ্বিক বিভিন্ন দাতা সংস্থার পাশাপাশি জাতিসংঘও আফগানিস্তানে আর্থিক সহায়তা দেওয়া বন্ধ করেছে।
তালিবান নেতারা অবশ্য বলেছেন, শিগগিরই এসব স্কুল খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
এসএমডব্লিউ