সমুদ্রপথে ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা, ২০২১ সালে ৩ হাজারেরও বেশি মৃত্যু
২০২১ সালে ইউরোপের প্রবেশের জন্য ভূমধ্যসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে সলিল সমাধি ঘটেছে ৩ হাজার ৭৭ জন অভিবাসন প্রত্যাশীর। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক কমিশন ইউএনএইচসিআরের নতুন এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে এ তথ্য।
প্রতিবেদনটির প্রকাশ উপলক্ষে সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় ইউএনএইচআরসি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র শ্যাবিয়া মান্তু জানান, ২০২১ সালে সাগরে ডুবে মরা বা নিখোঁজ হওয়া অভিবাসন প্রত্যাশীদের সংখ্যা তার আগের বছর ২০২০ সালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
বিজ্ঞাপন
ওই বছর ভূমধ্যসাগর ও আটলান্টিকে নিখোঁজ হয়েছিলেন ১ হাজার ৫৪৪ জন অভিবাসন প্রত্যাশী।
আরও বলা হয়েছে, ইউরোপে প্রবেশের জন্য অভিবাসন প্রত্যাশীদের ব্যবহার করা এই দু’টি রুটের মধ্যে গত বছর ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজের সংখ্যা ছিল বেশি— ১ হাজার ৯২৪ জন। অন্যদিকে, আটলান্টিক পাড়ি দিতে গিয়ে এ সময় নিখোঁজ হয়েছেন ১ হাজার ১৫৩ জন।
তবে এত মৃত্যু ও ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশে ইচ্ছুক অভিবাসন প্রত্যাশীদের সংখ্যা ও মৃত্যুহার কমছে না বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন শ্যাবিয়া মান্তু। তিনি বলেন, ‘এটা খুবই আশঙ্কাজনক যে, চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত চার মাসে ইউরোপে প্রবেশ করতে গিয়ে সাগরে নিখোঁজ হয়েছেন আরও ৪৭৮ জন মানুষ।’
এছাড়া, সমুদ্রে নিখোঁজ হওয়া অভিবাসন প্রত্যাশীদের প্রকৃত সংখ্যা প্রতিবেদনে লিখিত তথ্যের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি বলেও উল্লেখ করেছেন ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র।
ইউরোপের সঙ্গে এশিয়া ও আফ্রিকার সংযোগ রক্ষা করে ভূমধ্যসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিম উপকূল। ভূমধ্যসাগরের এক পাশে তুরস্ক,লিবিয়া ও তিউনিসিয়া এবং অপর পাশে ইতালি ও গ্রিস; আর আটলান্টিক মহাসগারের পশ্চিম উপকূলের এক পাশে আফ্রিকার দেশ সেনেগাল ও মৌরি তানিয়া ও অপর পাশে স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ।
বহু বছর ধরে বিভিন্ন দেশের অভিবাসন প্রত্যাশীরা অবৈধভাবে ইউরোপের প্রবেশের জন্য এ দু’টি পথ ব্যবহার করে আসছেন; তবে গত ২০১৫ সাল থেকে সমুদ্রপথে ইউরোপে যেতে ইচ্ছুক অভিবাসন প্রত্যাশীদের সংখ্যায় উল্লম্ফণ ঘটেছে এবং প্রতিবছরই এই সংখ্যা বাড়ছে।
শ্যাবিয়া মান্তু বলেন, ‘অভিবাসন প্রত্যাশীদের বহনকারী নৌকা বা নৌযানগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ত্রুটিযুক্ত, অসমতল ও অতিরিক্ত যাত্রীতে পূর্ণ থাকে। এ কারণে সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে সেগুলোর ডুবে যাওয়ার হারও বেশি।’
‘আমাদের এই প্রতিবেদনে ডুবে যাওয়া নৌকা ও নৌযানের যে সংখ্যা দেওয়া হয়েছে, তার চেয়ে প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি। গত বছর সাগরে ডুবে যাওয়া— অনেক নৌকা ও নৌযান সম্পর্কিত কোনো খোঁজ আমরা পাইনি।’
সূত্র: এএফপি
এসএমডব্লিউ