রাষ্ট্রীয় সফরে সৌদি আরবে গেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। বিগত ১৪ বছরের মধ্যে প্রথম উচ্চ-পর্যায়ের এই সফরে বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) তিনি দেশটিতে পৌঁছান।

তুর্কি প্রেসিডেন্টের আশা, এই সফরের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যকার টানাপোড়েন কাটিয়ে সম্পর্কের একটি নতুন যুগের সূচনা হবে। শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

তুরস্কের প্রেসিডেন্টর দপ্তর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সৌদি আরবে পৌঁছানোর পর জেদ্দার লোহিত সাগর তীরবর্তী আল-সালাম প্রাসাদে আয়োজিত সরকারি একটি অনুষ্ঠানে দেশটির বাদশাহ সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান।

এদিকে আঙ্কারার যোগাযোগ দপ্তর টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় জানিয়েছে, সৌদি আরবের ডি ফ্যাক্টো (প্রকৃত) শাসক ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পরে এরদোয়ান ও মোহাম্মদ বিন সালমান একান্তে বৈঠক করেন।

তুরস্কের প্রেসিডেন্টর দপ্তর জানিয়েছে, সৌদি বাদশাহের আমন্ত্রণে দেশটিতে সফর করছেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। মূলত আঙ্কারা ও রিয়াদের মধ্যে পুরনো উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যেই এই সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

সাংবাদিক ও ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ড নিয়ে মুসলিম বিশ্বের প্রভাবশালী এই দেশ দু’টির মধ্যে কয়েক বছর ধরে চলে আসা বৈরিতা তুর্কি নেতার এই সফরের মাধ্যমে কাটবে বলে আশা করা হচ্ছে। অবশ্য সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈরিতা লক্ষ্য করা গেলেও এ দু’টি দেশের মধ্যে একসময় ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।

২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসে জামাল খাশোগিকে হত্যা করা হয়। অভিযোগের আঙুল ওঠে যুবরাজ মোহাম্মেদ বিন সালমানের বিরুদ্ধেও। খাশোগিকে হত্যা নিয়ে তুরস্ক ও সৌদি আরবের বক্তব্য ছিল আলাদা। এই নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। খাশোগিকে হত্যার পর এই প্রথম সৌদি আরব সফরে গেলেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান।

সৌদি সফরে যাওয়ার আগে রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেন, তার এই সফরের উদ্দেশ্য দুই দেশের রাজনৈতিক, সামরিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের উন্নতি করা। খাশোগি হত্যার পর দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছিল।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, খাদ্যসুরক্ষা, প্রতিরক্ষা ও আর্থিক ক্ষেত্রে দুই দেশের সহযোগিতা আরও বাড়ানোর লক্ষ্যেই মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে যাচ্ছেন তিনি।

রয়টার্স বলছে, চলতি মাসে নীতি পরিবর্তনের মাধ্যমে সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজনদের বিচার স্থগিত এবং পরে সেটি ইস্তাম্বুল থেকে রিয়াদে স্থানান্তর করে তুরস্ক।

এরদোয়ান প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে আঙ্কারার সদিচ্ছার ইঙ্গিত হিসেবে মনে করা হয় এবং এরপরই প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সৌদি সফরের পথ খুলে যায়।

টিএম