কোশারি আল তাহরির রেস্তোরাঁ

এক খ্রিস্টান নারী ও তার সন্তানকে খাবার পরিবেশন না করায় মিসরের রাজধানী কায়রোর বিখ্যাত কোশারি আল তাহরির রেস্তোরাঁর একটি শাখা বন্ধ করে দিয়েছে কায়রোর স্থানীয় সরকার; শুক্রবার ঘটেছে এই ঘটনা।

মিসরের স্থানীয় পত্রিকাগুলোর বরাত দিয়ে আমিরাতের দৈনিক পত্রিকা গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার নিজের শিশু সন্তানকে নিয়ে কোশারি আল তাহরির রেস্তোরাঁর একটি শাখায় খেতে যান ওই খৃস্টান নারী; কিন্তু রেস্তোরাঁর কর্মচারীরা ওই নারী ও তার শিশু সন্তানকে খাবার পরিবেশন করতে অস্বীকৃতি জানান।

পরে ওই নারী এ বিষয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বরাবর অভিযোগ জানালে কর্তৃপক্ষ বিষয়টির তদন্ত শুরু করে। রেস্তোরাঁর কর্মচারীরা স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে বলেন, ওই নারী দিনের বেলায় এসেছিলেন এবং যেহেতু এখন রমজান মাস চলছে, তাই রোজার পবিত্রতা রক্ষার্থেই ওই নারী ও তার সন্তানকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু কর্তৃপক্ষ এই সাফাইয়ে সন্তুষ্ট হয়নি। কায়রোর স্থানীয় সরকার থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ সম্পর্কে বলা হয়, ব্যবাসায়িক নীতি লঙ্ঘণের অভিযেগে রেস্তোরাঁটি বন্ধ করা হয়েছে।

এদিকে কায়রোর স্থানীয় সরকারের এই পদক্ষেপকে সমর্থন ও প্রশংসা করছেন মিশরের প্রধান মসজিদ আল আজহারের প্রধান ইমাম আহমেদ আল তাইয়্যেব।

শনিবার মিসরীয় সাংবাদিক ভয়েস অব আল আজহারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তাইয়্যেব বলেন, ‘রোজার অজুহাতে অমুসলিমদের খাবার খেতে না দেওয়া ও তাদেরকে উপবাস করতে বাধ্য করা একেবারেই অযৌক্তিক একটি আচরণ এবং ইসলামের সঙ্গে এ ধরনের আচরণের কোনো সম্পর্ক নেই।’

‘যেসব মুসলিম রোজার দিনে তাদের অমুসলিম সহকর্মী বা প্রতিবেশীর খাদ্যগ্রহণের দৃশ্য সহ্য করতে পারেন না, তারা কি বাড়িতে নিজেদের শিশু সন্তানের ক্ষেত্রেও এমন আচরণ করেন? নিজের শিশুদেরকেও কি তারা অভুক্ত থাকতে বাধ্য করেন?’  

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা— উল্লেখ করে আল আজহার মসজিদের প্রধান ইমাম বলেন, ‘খ্রিস্টানদের প্রতি আন্তরিকতা বা তাদের ধর্মীয় উৎসবের সময়ে অভিনন্দন জানানো কেবল ভদ্রতা বা আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি আমাদের সত্য ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। মুসলিম ও খ্রিস্টান পরস্পর ভাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ; এবং আমাদের দেশে বর্তমান যেসব জটিলতা ও চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান আছে, সেসবকে অতিক্রম করতে হলে এই ভাতৃত্বের বন্ধন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

এসএমডব্লিউ