পুলিশের গুলিতে একজনের প্রাণহানির পর লঙ্কান শহরে কারফিউ
চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে বেসামরিক এক ব্যক্তির প্রাণহানির পর সহিংসতা ঠেকাতে শ্রীলঙ্কার রামবুক্কানা শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। বুধবার পুলিশ ওই শহরটিতে কারফিউ জারি করেছে।
গভীর অর্থনৈতিক সঙ্কটের জেরে চলমান অস্থিরতায় পুলিশের গুলিতে বেসামরিক প্রাণহানির ঘটনায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিন্দার ঝড় শুরু হয়েছে। সঙ্কটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার সরকার বর্তমান পরিস্থিতি সামলাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে সহায়তা চেয়েছে।
বিজ্ঞাপন
১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা পাওয়ার পর এবারই প্রথম সবচেয়ে বিপর্যয়কর অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে শ্রীলঙ্কা। দেশটিতে নিত্য-প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পণ্যসামগ্রীর তীব্র সঙ্কট চলছে। আমদানিতে বিপর্যয় দেখা দেওয়ায় দ্রব্যমূল্য আকাশ ছুয়েছে। উৎপাদনে ভাটা পড়ায় দিনের বেশিরভাগ সময়ই বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপ রাষ্ট্রের বাসিন্দাদের।
মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে থাকায় দেশটিতে হু হু করে বাড়ছে খাদ্য-ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজার থেকে জ্বালানি আমদানি করতে পারছে না দেশটি। ফলে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে শ্রীলঙ্কার গণপরিবহন ও বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা।
বিদ্যুৎ-খাদ্য-ওষুধ-জ্বালানি সংকটে অতিষ্ঠ শ্রীলঙ্কার জনগণ গত কিছু দিন ধরে সড়কে অবস্থান নিয়েছেন এবং সরকারের পদত্যাগের দাবিতে কলম্বোসহ দেশের সব বড় শহরে আন্দোলন শুরু করেছেন তারা। জনগণের ক্ষোভের মুখে ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভার অধিকাংশ সদস্য পদত্যাগ করেছেন।
তেলের তীব্র ঘাটতি এবং উচ্চ মূল্যের প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাজধানী কলম্বো থেকে ৯৫ কিলোমিটার দূরের রামবুক্কানা শহরে সড়ক অবরোধ করে লোকজন বিক্ষোভ করেন। এ সময় বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ার গ্যাস এবং তাজা গুলি বর্ষণ করে লঙ্কান পুলিশ। এতে ৪২ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৩০ জন।
স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্টের পাচক বসন্ত কুমারা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘আমার পায়ে এবং হাতে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। আমাকে না মারার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেছিলাম, কিন্তু তারা শোনেনি।’
তিনি বলেন, ‘লোকজন ক্ষুব্ধ। আমরা সবাই গরীব মানুষ। মৌলিক চাহিদা পূরণের দাবিতে লড়াই করছি।’ বুধবার রামবুক্কানা শহরে কারফিউ জারি করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। শহরের দোকান-পাট সকাল পর্যন্ত বন্ধ ছিল।
এসএস