নজিরবিহীন দ্রব্যমূল্য
শ্রীলঙ্কায় আপেলের কেজি ১ হাজার রুপি
শ্রীলঙ্কার খাদ্য বিক্রেতারা রাজাপাকসে সরকারের বিরুদ্ধে সব কিছু চীনের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ করছেন। তারা বলছেন, দেশে কিছুই নেই এবং অন্যান্য দেশের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সবকিছু কিনেছিল সরকার।
তীব্র অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক সংকটের জেরে শ্রীলঙ্কায় ফলমূল এবং শাকসবজির দাম এখন আকাশচুম্বী। দেশটির খাদ্যপণ্য বিক্রেতা ফারুখ বলেন, ৩-৪ মাস আগে আপেল প্রতি কেজি বিক্রি হতো ৫০০ রুপি। এখন তা ১ হাজার রুপি বিক্রি হচ্ছে। আগে প্রতি কেজি নাশপাতি ৭০০ রুপি দরে বিক্রি হতো, এখন প্রতি কেজি দেড় হাজার রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। মানুষের কাছে টাকা নেই।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কা সরকার চীনের কাছে সব বিক্রি করেছে। এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা। চীনের কাছে সব বিক্রি করায় শ্রীলঙ্কার কাছে কোনো অর্থ নেই। অন্যান্য দেশের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সবকিছু কিনছে শ্রীলঙ্কা।
দেশটির নাগরিকরা সরকারের প্রতি অসন্তোষ এবং ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। রাজা নামের অপর এক খাদ্য বিক্রেতা বলেন, প্রতিদিন দাম বাড়ছে এবং তাদের কাছে কোনো নগদ অর্থ নেই। কোনো ব্যবসা নেই। গোটাবায়াকে চলে যেতে হবে।
শ্রীলঙ্কায় নজিরবিহীন তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের মাঝে দেশটির বিরোধী দলীয় নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা নির্বাহী রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থা বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছেন। মঙ্গলবার দেশটির সংসদে ঝাঁজালো বক্তৃতায় একটি নতুন নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রবর্তনের প্রয়োজনীয়তার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছেন, গত ২০ বছর ধরে দেশের প্রত্যেক নেতা নির্বাহী রাষ্ট্রপতি ব্যবস্থা বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু কেউই সেটি করেননি।
এদিকে, দেশটির নতুন নিয়োগকৃত অর্থমন্ত্রী আলী সাবরি দায়িত্ব নেওয়ার ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতে মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন। খাদ্য এবং জ্বালানির তীব্র ঘাটতির পাশাপাশি ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে শ্রীলঙ্কা। করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর সময় থেকে দেশটিতে অর্থনৈতিক সংকট মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করে; বর্তমানে তা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য ও পণ্যসামগ্রীর তীব্র ঘাটতি দেখা দেওয়ায় বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর কাছে সহায়তা চেয়েছে শ্রীলঙ্কা। অর্থনৈতিক সঙ্কট ঘিরে সরকারের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান জনরোষের মধ্যে রোববার শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভার ২৬ মন্ত্রী পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
সূত্র: এএনআই।
এসএস