পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বিরোধীদের আনা অনাস্থা ভোটের ফল মেনে নাও নিতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। একই সঙ্গে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে যুক্তরাষ্ট্রের যোগসাজশে অনাস্থা ভোটের নকশা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন পাক এই প্রধানমন্ত্রী।

শনিবার নিজ কার্যালয়ে বিদেশি একদল সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেছেন ইমরান খান। দেশটির বিরোধী দলগুলো বলছে, করোনাভাইরাস মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করতে অথবা সরকারকে আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহি করার প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন ইমরান খান। যে কারণে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব আনা হয়েছে।

রোববার দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে এই অনাস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইমরান খান বলেন, ‘পুরো প্রক্রিয়া যখন সুনামহানি করে তখন আমি কীভাবে এই ভোটের ফল মেনে নিতে পারি? নৈতিক কর্তৃত্বের ওপর গণতন্ত্র কাজ করে। এই যোগসাজশের পরে কী নৈতিক কর্তৃত্ব অবশিষ্ট থাকে?’

অনাস্থা ভোটের পদক্ষেপ পাকিস্তানে শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা বলে অভিহিত করে ইমরান খান বলেন, ‘আমাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পদক্ষেপ অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের স্পষ্ট হস্তক্ষেপ।’

ইমরান খানের জোট সরকারের অন্যতম মিত্র মুত্তাহিদা কউমি মুভমেন্ট-পাকিস্তান (এমকিউএম-পি) বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবকে সমর্থন জানানোর পাশাপাশি জোট থেকে বেরিয়ে গেছে। এমকিউএম-পি বিরোধীদের সঙ্গে হাত মেলানোয় ইমরান খান ইতোমধ্যে সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন।

সাংবাদিকদের সঙ্গে ইমরান খান কথা বলার কয়েক ঘণ্টা আগে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া বলেন, ওয়াশিংটনের সাথে সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি করতে চায় পাকিস্তান।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত পাক প্রধানমন্ত্রীকে টেলিফোন করেননি। তবে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা চালাচ্ছে বলে ইমরান খান যে অভিযোগ করেছেন, তা অস্বীকার করেছে হোয়াইট হাউস।

ইসলামাবাদে এক নিরাপত্তা সম্মেলনে বাজওয়া বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের চমৎকার এবং কৌশলগত সম্পর্কের দীর্ঘ ইতিহাসের ভাগাভাগি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এখনও আমাদের বৃহত্তম রপ্তানি বাজার।’

তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক বজায় রাখলেও অন্যদের সাথে আমাদের সম্পর্ককে প্রভাবিত না করে উভয় দেশের সাথে আমরা সম্পর্কের সম্প্রসারণ এবং বৃদ্ধি ঘটাতে চাই।’

তবে এ বিষয়ে ইসলামাবাদে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাস তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস