ছবি : ডন

পার্লামেন্টারি আইনের বাধ্যবাধকতার কারণে পিছিয়ে গেল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে দেশটির বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতাদের অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপনের তারিখ। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির জাতীয় দৈনিক ডন।

পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার আসাদ কায়সার আগামী ২৮ মার্চ বিকেল ৪টা পর্যন্ত অ্যাসেম্বলির অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে ডনের প্রতিবেদনে।

আরও বলা হয়েছে, শুক্রবার পবিত্র কোরান তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অধিবেশন। তেলাওয়াতের পর সম্প্রতি পরলোকগত এমএনএ (ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি সদস্য) খায়াল জামান, সাবেক প্রেসিডেন্ট রফিক তারার ও উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্য রেহমান মালিকের বিদেহী আত্মার জন্য প্রার্থনা করা হয়।

প্রার্থনা শেষে অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেন আসাদ কায়সার। ঘোষণায় তিনি বলেন, পাকিস্তান পার্লামেন্টের আইন মেনেই এই স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।

পাকিস্তানের পার্লামেন্টারি আইন অনুযায়ী, কোনো পার্লামেন্ট সদস্য মারা যাওয়ার পর ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি বা সিনেটের প্রথম অধিবেশনে ওই মৃত সদস্যের উদ্দেশে প্রার্থনার পরই অধিবেশন মুলতবির ঘোষণা দিতে হবে।

 স্পিকার বলেন, ‘এটিই পাকিস্তান পার্লামেন্টের ঐতিহ্য এবং এ পর্যন্ত ২৪ বার এ রকম মুলতবি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।’

অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা ও পররাষ্ট্র নীতিতে ব্যর্থতার অভিযোগে ২০২০ সাল থেকেই ইমরান খানের পদত্যাগ ও অন্তবর্তী নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলো। পার্লামেন্টের প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি ও মুসলিম লীগ (নওয়াজ) এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

গত ০৮ মার্চ রাজধানী ইসলামাবাদে এই দু’টি দলের নেতৃত্বে ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। সেখানে বিরোধীরা পাকিস্তানের  প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশে  দাবি তোলেন—‘হয় পদত্যাগ করুন, নয়তো অনাস্থা ভোটের মুখোমুখী হোন’।

গত বছর মার্চে বিরোধীদের দাবিতে প্রথমবারের মতো অনাস্থা ভোটের মুখোমুখী হয়েছিলেন ইমরান খান, তবে সেবার খুবই অল্প ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়ে উৎরে গিয়েছিলেন তিনি। পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে আয়োজিত সেই আস্থা ভোটে জয়ের জন্য ইমরানের ১৭২টি ভোটের প্রয়োজন ছিল এবং তিনি পেয়েছিলেন ১৭৬ টি ভোট।

কিন্তু বিরোধী এমপিদের আবেদনের জেরে চলতি বছর ফের অনাস্থা ভোটের মুখে পড়তে হচ্ছে ইমরান খানকে। শুক্রবার এই বিষয়ক প্রস্তাব উত্থাপনের তারিখ ছিল। অবশ্য দেশটির কয়েকজন জ্যেষ্ঠ পার্লামেন্ট সদস্য জানিয়েছেন, আগামী ২৮ থেকে ৩০ মার্চের মধ্যেই এই প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে অনাস্থা প্রস্তাব।

শুক্রবারের অধিবেশনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি,  শিরীন মাজারি, আসাদ ওমর এবং আলি মুহম্মদ খান সহ ৫০ জন এমপি উপস্থিত ছিলেন।

আরও উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির বিরোধীদলীয় নেতা শেহবাজ শরিফ, পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি, কো চেয়ারম্যান আসিফ আলি জারদারিসহ ১৫০ জন বিরোধীদলীয় এমপি।

এসএমডব্লিউ