ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ, ছবি: ফ্রি প্রেস জার্নাল

ইউক্রেন ইস্যুতে ইতোমধ্যে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি না করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র; কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের দেখাদেখি ইউরোপও যদি একই সিদ্ধান্ত নেয়, সেক্ষেত্রে তা মহাদেশের ২৭ টি দেশের জন্য চরম বিপর্যয় বয়ে আনবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন।

সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘(রাশিয়ার তেলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর) যুক্তরাষ্ট্রে বড় কোনো পরিবর্তন হয়নি; আগে যেমন ছিল, এখনও অনেকটা তেমনি আছে।’

‘কিন্তু ইউরোপ যদি এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুসরণের সিদ্ধান্ত নেয়, সেক্ষেত্রে তা খুবই বিপর্যয়কর হবে তাদের জন্য এবং মহাদেশের প্রতিটি দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে দু’সপ্তাহ আগে দেশটি থেকে তেল-গ্যাস ও কয়লা আমদানি না করার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

এদিকে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে রাশিয়ার একের পর এক অর্থনৈদিক ও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইউরোপ। দেশটির প্রধান ব্যাংকগুলোকে ইউরোপের দেশগুলো থেকে কার্যক্রম গুটিয়ে নিতে বাধ্য করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা লেনদেন ব্যবস্থা সুইফট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে রাশিয়াকে, এমনকি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জমা থাকা রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদও ফ্রিজ করা হয়েছে।

কিন্তু এত নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরও ইউক্রেনে রুশ অভিযান বন্ধ না হওয়ায় এবার রাশিয়ার জ্বালানি সম্পদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়টি বিবেচনা করছে ইউরোপের কয়েকটি দেশ। মহাদেশের ২৭টি দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনাও হয়েছে।

তবে জোটের কয়েকটি সদস্যরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞার পক্ষে অবস্থান নিলেও বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে জার্মানি-নেদারল্যান্ডসের মতো ইইউয়ের নেতৃস্থানীয় দেশগুলো। এক বৈঠকে নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট বলেছেন, ‘ইইউ এখনও রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল এবং এমন কোনো বিকল্প এখন আমাদের সামনে উপস্থিত নেই যে আমরা আগামী কালই রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি কেনা বন্ধ করে দিতে পারব।’

রাশিয়ার জ্বালানি গ্যাসের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ইউরোপ। মহাদেশটির বার্ষিক গ্যাস চাহিদার ৪০ শতাংশেরও বেশি সরবরাহ আসে রাশিয়া থেকে।

তাছাড়া ইতোমধ্যে মস্কো হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন যদি রুশ তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়, সেক্ষেত্রে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেবে রাশিয়া।

সোমবারের সংবাদসম্মেলনে পেসকভ বলেন, ‘ইউরোপ যদি এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেয়, সেক্ষেত্রে বৈশ্বিক তেলের বাজারে তার গুরুতর প্রভাব পড়বে এবং মহাদেশটির জ্বালানি ভারসাম্য পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে।’

সূত্র: রয়টার্স

এসএমডব্লিউ