কাগজ কেনার টাকা নেই, শ্রীলঙ্কায় ১০ লাখ স্কুলে পরীক্ষা বাতিল
কাগজ সংকটের কারণে শ্রীলঙ্কায় ১০ লাখেরও বেশি স্কুলে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। সোমবার (২১ মার্চ) থেকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে শনিবার (১৯ মার্চ) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য তা বাতিল করার সিদ্ধান্ত জানানো হয় স্কুলগুলোকে।
বর্তমানে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য কাগজের জোগান দেওয়ার মতো ক্ষমতা নেই শিক্ষা দফতরের। এমনকি কাগজ আমদানি করার মতো পর্যাপ্ত টাকা নেই তাদের হাতে।
বিজ্ঞাপন
শ্রীলঙ্কায় কাগজ মূলত আমদানি করেই আনা হয়ে থাকে। আমদানি করা হয় কালিও। সেই প্রসঙ্গে শিক্ষা দফতরের এক কর্মকর্তা বলেছেন, যারা প্রশ্নপত্র ছাপায় তাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিদেশি মুদ্রা না থাকায় কাগজ এবং কালির জোগান মজুত করতে পারছেন না তারা। ফলে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া ছাড়া আপাতত উপায় নেই।
শুধু কাগজের ক্ষেত্রেই নয়। খাবার থেকে শুরু করে জ্বালানি, এমনকি ওষুধপত্রের জোগানেও টান পড়েছে দেশটিতে। আর্থিক সংকট এবং মূলত বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ স্বল্পতাই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা।
সংকট মোকাবিলায় সাহায্য চেয়ে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের কাছে সাহায্য চান শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। সংস্থাটি শুধু জানিয়েছে, বিষয়টি তারা বিবেচনা করে দেখছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় ৬৯০ কোটি ডলার দেনা রয়েছে শ্রীলঙ্কার। ভয়ঙ্কর আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। ১৯৪৮ সালে স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়নি দেশটিকে।
এই পরিস্থিতিতে আতঙ্ক বাড়ছে সাধারণের মধ্যেও। দেশজুড়ে খাবার এবং অত্যাবশ্যকীয় জিনিসপত্র মজুত করে রাখতে দোকানের বাইরে দেখা গেছে লম্বা লাইন। জ্বালানি মজুদ করার প্রবণতাও দেখা দিয়েছে। খরচ বাঁচাতে দিনের বেশ কিছুক্ষণ বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার দিকেও ঝুঁকতে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন। খাদ্য সংকট যাতে বিপুল আকার না-ধারণ করে তার জন্য রেশনে গুঁড়ো দুধ, চিনি, চাল এবং ডাল দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে সরকার।
এইচকে