হামলার ৩০ ঘণ্টা পর শনিবার ধ্বংসস্তপের নিচে থেকে একজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়

তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির সামরিক-বেসামরিক বহু অবকাঠামো রুশ সেনাদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। উঠেছে বেসামরিক প্রাণহানির অভিযোগও।

এই পরিস্থিতিতে রাতের আঁধারে ইউক্রেনের একটি সামরিক ঘাঁটিতে রুশ সামরিক বাহিনীর মিসাইল হামলায় বহু ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত শুক্রবার ইউক্রেনের মিকোলাইভ শহরের একটি সেনা ঘাঁটিতে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। শনিবার (১৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

একটি সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, গত শুক্রবার ইউক্রেনের মিকোলাইভ শহরের উত্তর প্রান্তে একটি সামরিক ঘাঁটিতে তিনটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। হামলার সময় ওই সামরিক ঘাঁটিতে প্রায় ২০০ ইউক্রেনীয় সেনা ঘুমাচ্ছিলেন। অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর প্রায় ৫৭ জন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

হামলার পর সরকারিভাবে হতাহতের কোনো পরিসংখ্যান ইউক্রেনের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হয়নি।

এদিকে হামলার ৩০ ঘণ্টা পর শনিবার উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে একজন জীবিতকে খুঁজে পেয়েছেন বলেও জানিয়েছে বিবিসি। উদ্ধারকৃত ওই ব্যক্তিকে স্ট্রেচারে করে ধ্বংসস্তূপের পাহাড় থেকে নামিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে শহরের কেন্দ্রের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।

ব্রিটিশ এই সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, গত রাতে মিকোলাইভ শহরের তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং আশঙ্কা করা হচ্ছে, হামলার পর সেই পরিস্থিতিতে সেখানে আর খুব বেশি মানুষ বেঁচে থাকতে পারেন না।

মিকোলাইভ আঞ্চলিক প্রশাসনের প্রধান ভিতালি কিম কাপুরুষোচিতভাবে ঘুমন্ত সৈন্যদের ওপর রকেট হামলা করার জন্য রুশ সামরিক বাহিনীকে অভিযুক্ত করেছেন। অন্যদিকে ম্যাক্সিম নামের এক ইউক্রেনীয় সৈন্যের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ‘হামলার পর কমপক্ষে ৫০টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ধ্বংসস্তূপে নিচে আরও কতজন আটকে রয়েছেন তা আমরা জানি না।’

অবশ্য যেকোনো সময় ওই সামরিক ঘাঁটিতে নতুন করে রুশ হামলা হতে পারে এমন আশঙ্কার মধ্যেই সেখানে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন কর্মীরা। সংবাদমাধ্যম বলছে, সেনা ঘাঁটির কাছেই হওয়া পৃথক একটি হামলায় ৯ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছিলেন। এবং তারা সবাই একটি দোকানের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

ইউলিয়া নামে সেখানকার এক নারী বিবিসি’কে বলেন, ‘আমি আপনাকে বলতে পারব না যে আমরা কতটা ভয় পেয়েছি। আমরা সবাই এখন ভূগর্ভস্থ কক্ষে থাকি। যখন সেনা ঘাঁটিতে বোমাগুলো আঘাত হানে - তখন সবকিছু কেঁপে উঠেছিল।’

টিএম