বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে শূকরের হৃদপিণ্ড নিজ দেহে প্রতিস্থাপন করেছিলেন যে ব্যক্তি, সেই ডেভিড বেনেট মারা গেছেন। গত ৭ মার্চ তার মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড মেডিকেল সিস্টেম হাসপাতাল।

বুধবার হাসপাতাল থেকে দেওয়া সেই বিবৃতিতে বলা হয়, শারীরিক অসুস্থতা বোধ করায় কয়েক দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হন বেনেট; কিন্তু কোনো চিকিৎসাতেই তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সম্প্রতি তাকে হাসপাতালের কমপ্যাশনেট পেলিয়াটিভ কেয়ারে স্থানান্তর করা হয়েছিল। গত ৭ মার্চ সেখানেই মৃত্যু হয়েছে তার।’

চলতি বছর ৭ জানুয়ারি এই মেরিল্যান্ড মেডিকেল সিস্টেম হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বেনেটের দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল জিন বিন্যাস বদলে নেওয়া একটি শূকরের হৃদপিণ্ড। ঠিক দু’মাসের মাথায় মারা গেলেন তিনি।

গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে গত বছর নভেম্বরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বেনেট। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তার হৃদপিণ্ডে গুরুতর অসুস্থতা ধরা পড়ে।

অস্ত্রোপচারের আগে ছয় সপ্তাহ ধরে তিনি হাসপাতালে শয্যাশায়ী ছিলেন বেনেট। একটি যন্ত্রের সহায়তায় বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল তাকে।

চিকিৎসকরা সে সময় পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বলেছিলেন, মানবদেহের হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপন করার মত শারীরিক অবস্থা বেনেটের নেই।

‘শেষ চেষ্টা’ হিসেবে দীর্ঘ সাত ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে ৫৭ বছর বয়সী ডেভিড বেনেটের দেহে পরীক্ষামূলকভাবে হৃৎপিণ্ডটি বসানো হয়।

এর আগে গত বছর অক্টোবরে প্রথমবারের মত পরীক্ষামূলকভাবে মানুষের শরীরে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপনে সফলতা পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা।

তবে বেনেটের ব্যাপারে ঠিক নিশ্চিত ছিলেন না হাসপাতালের চিকিৎসকরা। হাসপাতালের সার্জন বার্টলে গ্রিফিথ বলেছিলেন, ‘তিনি কতোটা সময় পাবেন (বাঁচবেন)- একদিন, সপ্তাহ, মাস, না কি বছর, আমি জানি না।’

তবে হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপনের পর সুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন বেনেট। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন, ফিজিক্যাল থেরাপিতে অংশ নিয়েছেন, কনসার্ট উপভোগ করেছেন, এমন কি নিজের পোষা কুকুর লাকির সঙ্গে নিয়মিত হাঁটতেও বেরোতেন তিনি।

হাসপাতালের সার্জন বার্টলে গ্রিফিত তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেছেন, ‘তিনি শেষ পর্যন্ত ধৈর্য ও সাহসিকতার সঙ্গে লড়ােই করে গেছেন। তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমরা আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’

সূত্র: এএফপি

এসএমডব্লিউ