চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সাড়ে ৫ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এসেছে পৌনে ১৪ লাখের নিচে।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে ব্রাজিল, যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪৪ কোটি ৫১ লাখ। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬০ লাখ ১৫ হাজার।

রোববার (৬ মার্চ) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫ হাজার ৬৩৭ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে দুই হাজারের বেশি। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬০ লাখ ১৫ হাজার ৪৮ জনে।

একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ লাখ ৭০ হাজার ৫৩৮ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ কোটি ৫১ লাখ ২২ হাজার ৯৬১ জনে।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৭ জন এবং মারা গেছেন ১৫৩ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৫৭ লাখ ২৩ হাজার ৯০৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৭০ জন মারা গেছেন।

অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৫০ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৮৬ হাজার ৭৬৯ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৬৮ লাখ ৬১ হাজার ৭৯৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৫৩৭ জনের।

গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় নতুন সংক্রমণ ও প্রাণহানি অনেকটা কমেছে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ হাজার ২১৩ জন এবং মারা গেছেন ৩২৮ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮ কোটি ৯ লাখ ১২ হাজার ৬১৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৯ লাখ ৮৩ হাজার ৮৩৭ জন মারা গেছেন।

লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৪৫ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৫৮ হাজার ৭৩৭ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ৯০ লাখ ৩৩ হাজার ৫২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৫১ হাজার ৯৮৮ জনের।

করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৫৫ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৫ হাজার ১৮১ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ২৯ লাখ ৬২ হাজার ৬৫৮ জন এবং মারা গেছেন ৫ লাখ ১৫ হাজার ৬৩ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩২ হাজার ৩৮৯ জন এবং মারা গেছেন ১৭৪ জন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯ হাজার ৯৬৩ জন এবং মারা গেছেন ১৭৩ জন। ইন্দোনেশিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ১৫৬ জন এবং মারা গেছেন ৩২২ জন।

গত একদিনে ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৩ হাজার ৬৭৮ জন এবং মারা গেছেন ১২০ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৩০ লাখ ১১ হাজার ৯৯৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৩৯ হাজার ২৪৩ জন মারা গেছেন। গত একদিনে পোল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৭৩৭ জন এবং মারা গেছেন ১৯৯ জন।

এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় চিলিতে ১৪৬ জন, আর্জেন্টিনায় ৮৪ জন, ইরানে ১৫৪ জন, জাপানে ২৫৫ জন, রোমানিয়ায় ৭৬ জন, ফিলিপাইনে ১০৯ জন এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় ২১৬ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ৩০৮ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ১৯ হাজার ৬০৪ জনের।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।

টিএম