ইউক্রেনে রুশ হামলায় ২ শিশুসহ ৮ বেসামরিক নিহত
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর বিমান হামলায় ৮ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দুই জন শিশু। বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ শহর থেকে দক্ষিণ-পূর্বে দুই ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত ইজিয়াম শহরে বিমান হামলা চালায় রুশ সামরিক বাহিনী। এতেই ওই দুই শিশুসহ ৮ বেসামরিক নাগরিক নিহত হন।
বিজ্ঞাপন
ইজিয়াম শহরের ডেপুটি মেয়র ভলোদিমির মাতসোকিন বলেছেন, রুশ বিমান হামলায় শহরের কেন্দ্রস্থলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া শহরের একটি সরকারি ভবনেও হামলা চালিয়েছে রুশ বিমান। এতে সেখানে দায়িত্বপালনরত এক পুলিশ সদস্য আহত হন।
এর আগে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে ভলোদিমির মাতসোকিন জানিয়েছিলেন, রুশ হামলায় অজ্ঞাত সংখ্যক বাসিন্দা নিহত হয়েছেন। রুশ গোলা তাদের আবাসিক ভবনে আঘাত হানলে তারা নিহত হন।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে ঢুকে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এবারই প্রথম ইউরোপের প্রথম দেশ হিসাবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ এবং সমুদ্রপথে ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।
এর আগে ইউক্রেনে সর্বাত্মক আক্রমণ শুরুর চতুর্থ দিনে নোভা কাখোভকা নামে দেশটির একটি শহর দখলে নেয় রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। নিউ কাখোভকা নামেও পরিচিত এই শহরটি ছোট হলেও কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কাখোভকা শহরটি দিনিপার নদীর তীরে অবস্থিত এবং এই নদীটি পানি পথে সরাসরি ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
কাখোভকা শহরের মেয়র ভলোদিমির কোভালেঙ্কো জানিয়েছিলেন, রুশ সেনারা কাখোভকা শহরের প্রধান প্রশাসনিক ভবন দখল করার পর সেখান থেকে ইউক্রেনের সকল পতাকা সরিয়ে দিয়েছে।
এছাড়া সামরিক অভিযান শুরুর একদিনের মাথায় গত শুক্রবার রাতে বিনা বাধায় ইউক্রেনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর মেলিতোপোল দখলে নেয় রুশ সেনারা। পরে শনিবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
সর্বশেষ ইউক্রেনের অন্যতম প্রধান শহর এবং বন্দরনগরী খেরসনের দখল নেয় রুশ সামরিক বাহিনী। ব্যাপক হামলার পর বুধবার কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেয় রুশ সেনারা। খেরসন শহরের মেয়র ইগোর কলিখায়েভ জানিয়েছেন, দেশের অন্যতম প্রধান এই শহরটি দখলে নেওয়ার পর রুশ সেনরা সিটি কাউন্সিল ভবনে প্রবেশ করে এবং শহরে কারফিউ জারি করে।
বিবিসি বলছে, প্রায় ৩ লাখ বাসিন্দার খেরসন শহরটি রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর দখলে যাওয়া মস্কোর জন্য বড় ধরনের এক বিজয়। রাশিয়ার সৈন্যদের হাতে পতন হওয়া সবচেয়ে বড় শহরও এটি। একইসঙ্গে সামরিক বাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘাঁটিও হবে শহরটি। এই শহর থেকে উপকূল বরাবর আরও ভেতরে এবং পশ্চিমের আরেক বৃহৎ বন্দরনগরী ওডেসার সাথে যোগাযোগ স্থাপিত হবে। কৃষ্ণ সাগরের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর এবং একটি শিল্পকেন্দ্র এই খেরসন শহর।
টিএম