রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর হামলার পর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের কাছে একটি এলাকায় ধোয়া উঠতে দেখা যায়। গত শনিবারের ছবি

ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বাত্মক হামলা শুরুর পর এক সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। এই কয়েকদিনে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির বহু শহর কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। তবে রাজধানী কিয়েভ এখনও দখলে নিতে পারেনি রুশ সামরিক বাহিনী। অবশ্য এজন্য হামলাও চালিয়ে যাচ্ছে রশিয়া।

বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) ভোরের আলো ফোটার আগেই ইউক্রেনের রাজধানীতে দফায় দফায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। মধ্যরাতে হওয়া এসব বিস্ফোরণের একটি ভিডিও সামনে এসেছে বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বৃহস্পতিবার ভোরে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে কমপক্ষে চারটি বিস্ফোরণ হয়েছে। এরমধ্যে কিয়েভ শহরের কেন্দ্রে দু’টি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটেছে। এরপরে একটি মেট্রো স্টেশনের কাছে আরও দু’টি বিস্ফোরণ হয়। এসময় বিমান হামলার সতর্কতামূলক সাইরেনের শব্দও শোনা যায়।

এছাড়া কিয়েভে শক্তিশালী বিস্ফোরণের একটি ভিডিও সামনে এসেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। এতে রাতের আধারে কিয়েভে বিস্ফোরণের দৃশ্য উঠে এসেছে। তবে ভিডিওটি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি সংবাদমাধ্যমটি।

এদিকে রুশ আগ্রাসের মুখে ইউক্রেনের অন্যতম প্রধান শহর এবং বন্দরনগরী খেরসনের পতন হয়েছে। ব্যাপক হামলার পর রাশিয়ার সামরিক বাহিনী দক্ষিণাঞ্চলীয় এই শহরটির দখল নেয়।

খেরসন শহরের মেয়র ইগোর কলিখায়েভ জানিয়েছেন, দেশের অন্যতম প্রধান এই শহরটি দখলে নেওয়ার পর রুশ সেনরা সিটি কাউন্সিল ভবনে প্রবেশ করে এবং শহরে কারফিউ জারি করে।

বিবিসি বলছে, প্রায় ৩ লাখ বাসিন্দার খেরসন শহরটি রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর দখলে যাওয়া মস্কোর জন্য বড় ধরনের এক বিজয়। রাশিয়ার সৈন্যদের হাতে পতন হওয়া সবচেয়ে বড় শহরও এটি।

একইসঙ্গে সামরিক বাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘাঁটিও হবে শহরটি। এই শহর থেকে উপকূল বরাবর আরও ভেতরে এবং পশ্চিমের আরেক বৃহৎ বন্দরনগরী ওডেসার সাথে যোগাযোগ স্থাপিত হবে। কৃষ্ণ সাগরের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর এবং একটি শিল্পকেন্দ্র এই খেরসন শহর।

উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর থেকে প্রতিবেশী ইউক্রেনে সর্বাত্মক রুশ সামরিক অভিযানের কারণে লাখ লাখ ইউক্রেনীয় দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।

হামলা শুরুর পর সপ্তাহ গড়ালেও ইউক্রেনজুড়ে রাশিয়ার বোমাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। তবে কিছু কিছু শহরে রুশ সৈন্যদের সঙ্গে ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করেছে।

টিএম