ঐতিহাসিক চেরনোবিল বিদ্যুৎকেন্দ্র দখলে নিয়েছে রাশিয়া
ইউক্রেনের ঐতিহাসিক চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দখল করে নিয়েছে রাশিয়া। বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) শুরু হওয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের প্রথম দিনেই ঐতিহাসিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই পরমাণু স্থাপনাটি দখল করে নেয় রুশ সামরিক বাহিনী।
ইউক্রেনের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বিজ্ঞাপন
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দফতরের উপদেষ্টা মিখাইলো পোডোলইয়াক বলেছেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে তুমুল আক্রমণের পর চেরনোবিল পারমাণবিক কেন্দ্রটির নিয়ন্ত্রণ নেয় রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। তবে সেখানকার নিরাপত্তা কোন পর্যায়ে রয়েছে তা এখনরও পরিষ্কার নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ব্যাপক আক্রমণের পর চেরনোবিল পারমাণবিক কেন্দ্রটির নিরাপত্তা সম্পর্কে বলাটা অসম্ভব। এটি আজ ইউরোপের জন্য অন্যতম বড় একটি হুমকি।’
অবশ্য এ ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ঘোষণা জানিয়েছিলেনম রুশ সামরিক বাহিনী চেরনোবিল পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র দখল করার চেষ্টা করছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এবারই প্রথম ইউরোপের প্রথম দেশ হিসাবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ এবং সমুদ্রপথে ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় হামলা শুরু করেছে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র বৃষ্টির মতো পড়েছে। এছাড়া ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের চেরনিহিভ, খারকিভ এবং লুহানস্ক সীমান্ত পেরিয়ে হাজার হাজার রুশ সৈন্য স্থলপথে দেশটিতে ঢুকে পড়েছে।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১৯৮৬ সালেল ২৬ এপ্রিল ভয়াবহ পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটে। ওই দিনটি ‘চেরনোবিলের বিপর্যয়’ হিসেবে পরিচিত। সোভিয়েতের পতনের পর চেরনোবিল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বর্তমান ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্ত হয়। এই পারমাণবিক দুর্ঘটনাকে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ও বিপর্যয় হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে।
উল্লেখ্য, মস্কোর স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটে প্রতিবেশী এই দেশটিতে হামলার ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর কিছু সময়ের মধ্যেই রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র ও কামানের গোলা ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থাপনায় আঘাত হানতে শুরু করে। কিয়েভের সামরিক সদর দপ্তরের পাশাপাশি হামলা হয় দেশটির সামরিক বাহিনীর মিসাইল কমান্ড সেন্টারগুলোতেও।
বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে কিয়েভে বিস্ফোরণের পর ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দা সদরদপ্তর কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। যুদ্ধ এড়াতে পশ্চিমা নেতাদের ব্যর্থ কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেওয়ার পর নজীরবিহীন সংঘাতের মুখোমুখি হয়েছে দেশটি।
টিএম