বর্তমানে দেশে চার হাজারের অধিক উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদশূন্য থাকা স্বত্বেও ৩০ হাজার ডিপ্লোমা চিকিৎসক (স্যাকমো) বেকার। এমনকি গত ২০১৪ সালের পর থেকে স্বাস্থ্য অধিদফতরে কোনো নিয়োগ নেই বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টদের সংগঠন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাস্তবায়ন কমিটি।

বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার শূন্য পদে দ্রুত নিয়োগের দাবিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির বক্তারা এসব তথ্য জানান।

অনুষ্ঠানে সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক মো. মেহেদী হাসান উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারদের নিয়োগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রামের অসহায় মানুষের কথা ভেবে প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মাধ্যমেই ডিপ্লোমা চিকিৎসকদের সৃষ্টি হয়। চার বছর মেয়াদী মেডিকেল ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করে আমরা বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদ থেকে ডিএমএফ ডিগ্রি ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল থেকে প্রাকটিশনার হিসেবে রেজিস্ট্রেশন পেয়ে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সফলভাবে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত রয়েছি। সফলতার স্বীকৃতি হিসেবে আমাদের একজন পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে মহামূল্যবান ‘জনপ্রশাসন পদক’।

তিনি আরও বলেন, করোনা সংকটে আমরা কোভিড রোগীর চিকিৎসাকেন্দ্র কুয়েত মৈত্রি হাসপাতাল, কুর্মিটোলা হাসপাতালসহ নবপ্রতিষ্ঠিত সব কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছি। গ্রামে সন্দেহজনক কোভিড রোগীদের নমুনা সংগ্রহের কাজ করছি। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাদের সহকর্মী ৩১ জন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন। একমাত্র আমরাই তৃণমূল থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজ করে থাকি। কোনো গ্রাজুয়েট চিকিৎসক বা নার্স গ্রামে যান না।

দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ত্রিশ হাজার ডিপ্লোমা চিকিৎসক বেকার। ২০১৪ সালের পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নিয়োগ নেই। কিন্তু চার হাজার উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদশূন্য। বর্তমান চিকিৎসা সংকটের এই মুহূর্তে ডিপ্লোমা চিকিৎসকদের নিয়োগ খুবই জরুরি বলে দাবি রাখে।

তিনি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে নিয়োগের দাবি জানান এবং তাদের অন্যান্য দাবিগুলো পেশ করেন।

এক মাসের আল্টিমেটাম দিয়ে সংগঠনটির সমন্বয়ক আরও বলেন, দ্রুততম সময়ে (আনুমানিক ১ মাস) নিয়োগের বিষয়ে কোনো সঠিক সিদ্ধান্ত না পেলে ঢাকার রাজপথে কাফনের কাপড় পরে আমরণ অনশনে যেতে বাধ্য হবো। আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আমরাই বার বার বিমাতাসূলভ আচরণের শিকার হচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনটির সাংগঠনিক সমন্বয়ক আদনান মাহাবুব, দপ্তর সমন্বয়ক হামিদুর রহমান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পুষ্প রাণী, রুবেল হোসাইন, ইউনুস আহম্মেদ সহ অন্যান্যরা। এছাড়াও সংগঠনের জেলা উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

টিআই/এমএইচএস