করোনা মহামারির এ সময়ে গর্ভধারণ করার যথাযথ সময় বেছে নেওয়াটা খুব জরুরি। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সময় নির্বাচনে সামান্য ভুল হলেই হবু মায়ের নানা শারীরিক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। ক্ষতি হতে পারে গর্ভস্থ ভ্রূণের। শঙ্কা থাকে সদ্যোজাতকে নিয়েও। সেই আশঙ্কা আরও বেড়ে যায় যদি কোনো নারী আগে করোনা আক্রান্ত হয়ে থাকেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)’ কিছুদিন আগে জানিয়েছে, অন্য নারীদের চেয়ে হবু মায়েদের করোনায় সংক্রমিত হওয়ার বিপদ বেশি। আর আগে যদি কেউ করোনা সংক্রমিত হয়ে থাকেন, তা হলে পরবর্তীতে তার গর্ভধারণের সময় নির্বাচনে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন প্রয়োজন। নিজের স্বার্থে, গর্ভস্থ ভ্রূণের স্বার্থে, সদ্যোজাতের স্বাস্থ্যের স্বার্থে এ সতর্কতা মানতে হবে।

সিডিসি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, কিছুদিন আগে কোনো নারী যদি করোনা সংক্রমিত হয়ে থাকেন, তা হলে তাকে গর্ভধারণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কয়েকটি জিনিস ভেবে দেখতে হবে। ভেবেচিন্তে গর্ভধারণের সঠিক সময় নির্বাচন করতে হবে।

করোনা সংক্রমিত হওয়ার পর ন্যূনতম কত দিন ব্যবধানে গর্ভধারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত কোনো নারীর? এ ব্যাপারে সম্প্রতি প্রকাশিত বিভিন্ন গবেষণাপত্রের ফলাফল যা বলছে তার সঙ্গে সিডিসি বা ডব্লিউএইচওর বিশেষজ্ঞদের মতামতগুলোকে মেলালে যেটা স্পষ্ট হয়ে উঠছে তা হলো, করোনা সংক্রমিত হওয়ার পর কোনো নারীর প্রথম কাজ হবে তা থেকে সেরে ওঠা। সেরে ওঠার পরও গর্ভধারণের সিদ্ধান্ত নেওয়াটা উচিত হবে না। তার জন্য আরও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। অন্তত ৮ সপ্তাহ। অর্থাৎ দুই মাস বা তার সামান্য বেশি সময়।

এ সময়ের প্রয়োজন কেন? বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার পরও শরীরের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসতে কিছুটা সময় লাগে। এটা সব ধরনের সংক্রমণের ক্ষেত্রেই সত্য। করোনার ক্ষেত্রে তো বটেই। কারণ করোনার বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধী অ্যান্টিবডিগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে গড়ে উঠতে কম করে ছয় থেকে আট সপ্তাহ সময় লাগেই। গর্ভধারণ করলে যে অ্যান্টিবডিগুলোর আরও কিছুটা বেশি পরিমাণে তৈরি হওয়া প্রয়োজন। আর সেটা সবচেয়ে ভালো হতে পারে সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার অন্তত দুই মাস পর গর্ভধারণ হলে।

বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এও জানিয়েছেন, বিভিন্ন গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে আগে কোনো নারী যদি করোনা সংক্রমিত হয়ে থাকেন তা হলে গর্ভধারণের ক্ষেত্রে তার কোনো সমস্যা হয় না।

সূত্র: আনন্দবাজার

এসএসএইচ