স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আমরা ইতোমধ্যে ৩১ কোটি ডোজ ভ্যাক্সিন জোগানের ব্যবস্থা করেছি। এ ভ্যাক্সিন থেকে প্রতি মাসে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভ্যাক্সিন আমাদের হাতে চলে আসছে। এর মধ্যেই সাত কোটি প্রথম ডোজ, পাঁচ কোটি ডাবল ডোজসহ মোট ১২ কোটি ডোজ ভ্যাক্সিন দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্যপূরণে বুস্টার ডোজসহ মোট ২৮ কোটি ডোজ ভ্যাক্সিনের প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে ৩১ কোটি ডোজ ভ্যাক্সিন হাতে পাওয়ার সংস্থান করা গেছে। কাজেই বুস্টার ডোজসহ আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ২৮ কোটি ডোজ ভ্যাক্সিন লাগলেও আমাদের হাতে আরও তিন কোটি ডোজ ভ্যাক্সিন থাকবে।

‘ইতোমধ্যে আমরা স্কুলপর্যায়সহ বস্তিতে গিয়েও ভ্যাক্সিন দিয়েছি। আগামী মাস থেকে প্রতি মাসে আমরা অন্তত চার কোটি ডোজ ভ্যাক্সিন দেবার কাজ শুরু করছি। এজন্য আগামী মাস থেকেই আমরা দেশের প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ভ্যাক্সিন দেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছি। এতে আশা করা যায়, আগামী মে-জুনের মধ্যেই আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সক্ষম হব।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে ইডিসিএল (এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লি.) কর্তৃক আয়োজিত ইডিসিএল-এর বার্ষিক জেনারেল মিটিং ও বোর্ড সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

দেশে ইডিসিএল এ নানা রকম ওষুধের উৎপাদনের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। দেশের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে নানা ধরনের ওষুধের উৎপাদনের চাহিদাও পাচ্ছে ইডিসিএল। কিন্তু সে তুলনায় ইডিসিএল স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। অবকাঠামো দুর্বলতা, যন্ত্রপাতির ঘাটতি, ফ্যাক্টরির জায়গা স্বল্পতাসহ এখানে নানা রকম সমস্যা রয়েছে। এজন্য ইডিসিএল-এর জন্য একটি অত্যাধুনিক মানের কারখানা নির্মাণের বিল এখন একনেকে রয়েছে। এটি দ্রুতই সম্পন্ন হবে।

এসব উদ্যোগ সম্পন্ন করার পর ইডিসিএল আরও বেশি শক্তিশালী হবে বলে সভায় জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ করোনা মোকাবিলায় বিশ্ববাসীর প্রশংসা পেয়েছে। সাউথইস্ট এশিয়াতে করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ প্রথম হয়েছে। ব্লুমবার্গ প্রশংসা করেছে। ১২০টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন করা হয়েছে। ফিল্ড হাসপাতাল করা হয়েছে। হাসপাতাল বেড বাড়ানো হয়েছে। দেশে করোনার সময় কোথাও ওষুধ বা অক্সিজেন সংকট দেখা দেয়নি। সঠিক চিকিৎসা গাইডলাইন ছিল বলেই করোনা এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

‘সামনে ওমিক্রনে আবার চাপ বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে শুধু ভ্যাকসিন ওমিক্রন ঠেকাবে না। আমাদের স্বাস্থ্যবিধি যথার্থ নিয়মে মানতে হবে। তাহলেই ওমিক্রন ছড়াবে না’- বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

ওমিক্রন মোকাবিলায় সবাইকে মুখে মাস্ক পরারও আহ্বান জানান জাহিদ মালেক।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর এ বি এম খুরশিদ আলম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর শারফুদ্দিন আহমেদ, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু, ডিজিডিএ-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমানসহ বক্তারা।

সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ইডিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এহসানুল কবির।

এমএআর/