প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধে দেশে পরীক্ষামূলকভাবে দুই দিনের টিকা (২৭ ও ২৮ জানুয়ারি) কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম দিনে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ৫ জনসহ মোট ২৬ জনকে টিকা দেওয়া হয়। 

এখন পর্যন্ত তাদের কোনো ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া যায়নি। বরং নিজ নিজ কর্মস্থলে প্রত্যেকেই ব্যস্ত সময় পার করছেন।

কোভিড-১৯ টিকা নেওয়া প্রথম পাঁচজন কেমন আছেন জানতে রোববার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় তাদের সঙ্গে ঢাকা পোস্টের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়।

এসময় তারা জানান, সুস্থ আছেন। টিকা নেওয়ার পরদিন থেকেই তারা যোগ দিয়েছেন কাজে। তাদের বার্তা, টিকা নিতে ভয় নয়, বরং টিকার হাত ধরেই মুক্তি আসবে মহামারি থেকে।

রুনু বেরুনিকা কস্তা
দেশের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে বেক্সিমকোর আনা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা নিয়েছিলেন সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরুনিকা কস্তা। তিনি কুর্মিটোলা হাসপাতালের ডায়ালাইসিস ইউনিটের ইনচার্জ। টিকা নেওয়ার পর কেমন আছেন জানতে চাইলে ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, ‘আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি। আগে যেমন ছিলাম, টিকা নেওয়ার পরও তেমনি আছি। টিকার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আমি আমার শরীরে লক্ষ্য করিনি। সাধারণ টিকায় ছোটখাটো যে প্রতিক্রিয়া হয়, আমার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিক্রিয়াই হয়নি। আমি একদম ভালো আছি।’

টিকা নিয়ে অফিস করছেন নাকি ছুটি নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘টিকা নেওয়াকে কেন্দ্র করে আমি কোনো ছুটি নেইনি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আমরা যারা কোভিড ডেডিগেটেড হাসপাতালে ডিউটি করি, তারা ১৫ দিন ডিউটি করে ১৫ দিন আইসোলেশনে থাকি। সেই ১৫ দিন ডিউটি শেষে আমার এখন ছুটি চলছে। আগামী মাসের ৯ তারিখ থেকে আমার অফিস শুরু হবে। আশা করছি ৯ তারিখেই আবার হাসপাতালে ডিউটিতে ফিরব।’

টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে সাধারণ মানুষের ভয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘টিকা নিয়ে সাধারণ মানুষের ভাবনার জন্যই তো প্রথমে ২৬ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। যদি এই ভয় না থাকত, তাহলে তো ২০ লাখ টিকা ২০ লাখ লোকেই নিয়ে নিত। তাই সবার প্রতি আমার একটাই বার্তা, টিকা নিয়ে কোনো ধরনের ভয় পাবেন না। টিকা নেওয়ার পর আমার শরীরে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি। দেশের জনগণ আস্থার সঙ্গে এই টিকা নিতে পারবে, আর সবাই টিকা নিলে দেশ করোনামুক্ত হবে।’

ডা. আহমেদ লুৎফুল মোবেন
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে প্রথমদিনে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসাবে টিকা নেন ডা. আহমেদ লুৎফুল মোবেন। কেমন আছেন জানতে চাইলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমি ভালো আছি, কোনো অসুবিধা নেই। নিয়মিত চেম্বার করি, রোগী দেখি, ঘুরে বেড়াই। এমনকি গতকালের টিকা প্রোগ্রাম (দ্বিতীয় দিনের টিকা কর্মসূচি) পরিচালনা করেছি। আমার কোনো ধরনের সমস্যাই দেখা দেয়নি।’

কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, জ্বর-মাথা ব্যথাকে টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে নিলে তো বিপদ। টিকা দেওয়ার পর জ্বর হবে এটাই তো স্বাভাবিক। নয়তো টিকা কাজ করবে কিভাবে? তবে জ্বর হলেও সেটা স্থায়ী হবে না, কয়েকদিনের মধ্যেই ছেড়ে দেবে। ইপিআই টিকা নেওয়ার পর বাচ্চাদেরও জ্বর হয়, তখন তো আমরা নাপা সিরাপও দিয়ে দেই যেন জ্বর হলে খাওয়ায়, এটা খুবই সাধারণ বিষয়। সুতরাং জ্বর হওয়াটা স্বাভাবিক রিঅ্যাকশন, এটা সাইড ইফেক্ট না।

টিকা নিয়ে ছুটি নিয়েছেন নাকি কর্মস্থলেই আছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘টিকা নেওয়ার জন্য ছুটি নেওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। টিকা নেওয়ার পরের দিন সকাল সাড়ে ৮টায় হাসপাতালে গেলাম, সেদিন আমাদের হাসপাতালে ১০০ জনের টিকা প্রোগ্রাম পুরোটাই আমি পরিচালনা করেছি। সব মিলিয়ে কোভিড টিকা নিয়ে আমি ভালো আছি।’

দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমাদের মেসেজটা খুবই ক্লিয়ার, যেহেতু টিকা এখন নিতে হবে, অবশ্যই সবার নেওয়া উচিত। দ্বিতীয়ত হলো, আমাদের যেহেতু ইপিআইয়ের টিকা নেওয়ার অভ্যস্ততা রয়েছে এবং আমাদের সামনেই আমাদের সন্তানরা টিকা নিচ্ছে, তেমনি করোনা টিকাকেও আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। ইপিআই টিকার ফলাফলে যা যা হতে পারে, এই টিকাতেও ঠিক তাই হবে। এটা নিয়ে একদম ভয়ের কিছু নেই। আর এই টিকার অতিরিক্ত কোনো সাইড ইফেক্ট এখন পর্যন্ত কোথাও দেখা যায়নি।’

অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা
দেশে তৃতীয় ব্যক্তি হিসাবে টিকা নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। টিকা নেওয়ার অভিজ্ঞতা ও কেমন আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেভাবেই হোক মানুষের মধ্যে একটা অপপ্রচার ছড়িয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে অন্য কর্মীদের বলব ভ্যাকসিন নেওয়ার কথা, আমি যদি না নিয়ে বলি তাহলে সেটা হয়তো সঠিক হবে না। আমি আমার পরিবার, সহকর্মীদের জানাইনি। আমি নিজে থেকেই সংকল্প করেছি। ভ্যাকসিন নিলে মানুষের যে ক্ষতি হবে এই অপপ্রচার বন্ধ হবে।’

ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘টিকা নেওয়ার পর আমি সম্পূর্ণভাবে সুস্থ আছি। কোনোরকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি। টিকা নেওয়ার পর থেকেই আমি আমার স্বাভাবিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত আছি। টিকা নেওয়ার পর যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার কথা, তাও আমার হয়নি। জ্বর তো পরের কথা, টিকা নেওয়ার স্থানে ব্যথা, লাল হয়ে যাওয়া বা ফুলে যাওয়া এগুলোর কিছুই হয়নি।’

টিকা নেওয়ার পর বিশ্রামের জন্য কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়েছেন বা নেবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ছুটির তো প্রশ্নই আসে না। আমি তো প্রথম দিনে টিকা নেওয়ার পর থেকেই অফিসিয়াল কাজে যুক্ত আছি। গতকালও ৫টি হাসপাতালে টিকা কর্মসূচিতে, ঢাকা মেডিকেলে টিকা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমার উপস্থিতিতেই টিকাদান শুরু হয়েছে। সেখানে আমি ঘণ্টাখানেক সময় দিয়েই পরে আমি আমার অফিসে এসেছি এবং অফিসের সব কাজকর্ম করেছি। আজকেও আমি গিয়েছি এবং করোনার যে প্রেসরিলিজ সেটা দেখে স্বাক্ষর করে মিডিয়াগুলোতে পাঠিয়ে পরেই বাসায় এসেছি।’

স্বাস্থ্যের অতিরিক্ত এই ডিজি বলেন, ‘সাধারণ মানুষ যে সবাই টিকা পাবে বা এখনি দেওয়ার সুযোগ পাবে এমনটা নয়। যার যখন সুযোগ আসবে তিনি যেন নিশ্চিন্তেই এই কোভিড টিকা নেন এবং নিজেকে সুরক্ষিত রাখেন। তবে টিকা নিলেই যে আপনি সেফ হয়ে যাবেন তা কিন্তু নয়, স্বাস্থ্য সুরক্ষার যে নিয়মগুলো আছে যেমন- মাস্ক পড়া, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাত ধোয়া এই অভ্যাসগুলো আমাদেরকে চালু রাখতে হবে। অর্থাৎ প্রথম ডোজ এবং দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরেও সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সুরক্ষিত থাকতে হবে।’

দিদারুল ইসলাম
যাদের জয়বাংলা ধ্বনিতে দেশে শুরু হয়েছিল বহুল প্রতীক্ষিত কোভিড-১৯ টিকা নেওয়ার মহাযজ্ঞ, তাদেরই একজন দিদারুল ইসলাম। দেশের প্রথম কোনো পুলিশ সদস্য হিসেবে বুধবার (২৭ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে টিকা নেন এ ট্রাফিক সার্জেন্ট। তবে টিকা নেওয়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কিংবা শারীরিক কোনো সমস্যা অনুভূত হয়নি বলে জানান দিদারুল ইসলাম।

টিকা নেওয়ার পর কেমন আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই টিকা গ্রহণ করার পর তার কোনো সমস্যা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। সম্পূর্ণ সুস্থবোধ করছি। আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালোই আছি। দেশের জনগণের সেবক হিসেবে বলতে চাই সবাই টিকা গ্রহণ করুন।’

তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের সেবক হিসেবে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে চাই, যেন সবাই ভ্যাকসিন নিয়ে দেশকে করোনামুক্ত করতে সাহায্য করে। জনগণের সেবক ও তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে এই ভ্যাকসিন নিয়েছেন বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।’

দ্বিতীয় দিনে টিকা নেন মন্ত্রী-আমলাসহ ৫ শতাধিক ব্যক্তি
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে মন্ত্রী, আমলা, চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীসহ ৫ শতাধিক ব্যক্তি টিকা নিয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দিনে টিকাদান কর্মসূচির সফল উদ্বোধনের পর দ্বিতীয় দিনেও সফলভাবে টিকাদানের সমাপ্তি হয়েছে। রাজধানীর পাঁচটি হাসপাতালে দ্বিতীয় দিনে মোট ৫৪১ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে।

তার মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২০ জনকে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮ জনকে, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ১০০ জনকে, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ৫৮ জনকে এবং মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৫ জনকে টিকাদান করা হয়েছে।

টিকা নিয়ে ‘পর্যবেক্ষণে’ থাকবেন স্বাস্থ্যকর্মী-স্বেচ্ছাসেবকরা
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ টিকা প্রয়োগ বিষয়ক এক পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, দেশব্যাপী টিকাদান শুরু হওয়ার আগে কিছু স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবককে টিকা দিয়ে তাদের কিছুদিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। টিকা ব্যবস্থাপনায় ভুলত্রুটি শনাক্ত করা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জানার জন্য এই উদ্যোগ। এরপর দেশব্যাপী টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে।

এতে আরও বলা হয়েছে, টিকাদান কর্মী নিজে টিকা নেওয়ার পর ৫-৭ দিন হয়তো কাজে যোগ দিতে পারবেন না। সেই বিবেচনায় প্রতিটি উপজেলা এবং সিটি করপোরেশনে টিকাদান টিম গঠন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এসব বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার বলেন, সুষ্ঠুভাবে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যে সারাদেশে আমাদের প্রায় ৭ হাজার ৩৪৪টি টিম করা হয়েছে। প্রতিটি টিকাদান কেন্দ্রে সর্বমোট ৬ জন কাজ করবেন। যার মধ্যে ২ জন দক্ষ টিকাদান কর্মী এবং ৪ জন স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন। শিক্ষানবিশ চিকিৎসক, নার্স, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো), পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, ল্যাব টেকনোলজিস্ট, মিডওয়াইফ, এনজিও ভ্যাকসিনেটরদের মধ্য থেকে টিকাদান কর্মী নির্বাচন করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে থাকবেন পুলিশ, আনসার ভিডিপি, সমাজকল্যাণকর্মী, শিক্ষক, অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী এবং অন্যান্য সমাজকর্মীরা।

টিকাদান পরবর্তী বিরূপ ঘটনা বিষয়ক সারভিল্যান্স
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ টিকা প্রয়োগ বিষয়ক পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, টিকা দেওয়ার পর নির্দিষ্ট কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়া স্বাভাবিক। যেমন- ইনজেকশন দেওয়ার স্থানের চারদিকে লালভাব, ফোলাভাব বা ব্যথা হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে টিকা দেওয়ার পরে প্রথম তিন দিন ক্লান্তি, জ্বর এবং মাথা ব্যথা হতে পারে। ভ্যাকসিন দেওয়ার পর এই সাধারণ প্রতিক্রিয়াগুলো সাধারণত হালকা ধরনের হয় এবং কয়েকদিনের মধ্যে সেরে যায়। বিদ্যমান টিকাদান পরবর্তী জটিলতা কার্যক্রমকে আরও জোরদার করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটিকে পুনঃবিন্যাস করা হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

৪ ফেব্রুয়ারি আসছে ‘সুরক্ষা’ অ্যাপ
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সারাদেশে একযোগে টিকা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে ৭ ফেব্রুয়ারি। টিকা গ্রহীতাদের নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনায় আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি সুরক্ষা অ্যাপ প্লে-স্টোরে চলে আসবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খোরশেদ আলম।

তিনি বলেন, নিবন্ধনের জন্য সুরক্ষা অ্যাপ প্রস্তুত রয়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই গুগল প্লে-স্টোরে অ্যাপটা আপলোড করেছি। ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই এটা অ্যাপ্রুভ হয়ে যাবে। তখন থেকেই এটা ডাউনলোড করা যাবে।

স্বাস্থ্য মহাপরিচালক বলেন, আপাতত ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আমাদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া চলছে। সর্বশেষ খবর পেয়েছি ১৫ হাজারের মতো নিবন্ধন সম্পন্ন হবে। যারা অনলাইনে নিবন্ধন করতে পারবেন না তাদের উপজেলা পর্যায়ে সহায়তা করবে আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা।

আজকালের মধ্যেই সারাদেশে পৌঁছাবে টিকা
ডা. খুরশিদ আলম বলেন, আজকালের মধ্যে ৬৪ জেলায় টিকা পৌঁছাবে। বেক্সিমকো ফার্মা আমাদের বলেছে আজ-কালের মধ্যে তারা জেলায় জেলায় টিকা পৌঁছে দেবে। সারাদেশে টিকা প্রয়োগের সব সরঞ্জামও প্রস্তুত আছে।

তিনি আরও বলেন, টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নের বুথগুলোকে প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামীকালের মধ্যেই টিকাদান কর্মীদের প্রশিক্ষণ শেষ হবে। সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আগামীকাল উপজেলার ফোকাল পারসনদের ভার্চুয়াল মিটিং অনুষ্ঠিত হবে। তাদের থেকে যা পরামর্শ আসবে আগামী পাঁচ-ছয় দিনের মধ্যে সেগুলো নিয়ে কাজ করা হবে। টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নে সাত হাজার ৪০০ টিম কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

বিভাগীয় পর্যায়ে ভ্যাকসিন পরিকল্পনা
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ডিস্ট্রিবিউশন প্ল্যানে দেখা গেছে, ঢাকা বিভাগে টিকা দেওয়া হবে ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ৫৪৫ জনকে। চট্টগ্রাম বিভাগে দেওয়া হবে ২৯ লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৩ জনকে, রাজশাহী বিভাগে ১৯ লাখ ২৪ হাজার ৯২২ জনকে, রংপুর বিভাগে ১৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫৯ জনকে, খুলনা বিভাগে দেওয়া হবে ১৬ লাখ ৩৩ হাজার ৬৪৬ জনকে, সিলেট বিভাগে দেওয়া হবে ১০ লাখ ৩২ হাজার জনকে এবং বরিশাল বিভাগে আট লাখ ৬৬ হাজার ৯৯৪ জনকে টিকা দেওয়া হবে। তিন রাউন্ডে এ জনগোষ্ঠী টিকা পাবেন।

টিআই/জেডএস