বঙ্গভ্যাক্স : বানরে ট্রায়াল শেষ, মানবদেহের অপেক্ষা
করোনা প্রতিরোধে গ্লোব বায়োটেকের তৈরি বঙ্গভ্যাক্স টিকার অ্যানিমেল ট্রায়াল সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি করছে প্রতিষ্ঠানটি। একইসঙ্গে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদে (বিএমআরসি) ট্রায়ালের প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে।
বিএমআরসির অনুমোদন পেলে চলতি মাসেই মানবদেহে ট্রায়াল শুরুর আশা করছে গ্লোব বায়োটেক। সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির কোয়ালিটি অ্যান্ড রেগুলেটরি বিভাগের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।
বিজ্ঞাপন
তিনি জানান, বানরের দেহে বঙ্গভ্যাক্স ট্রায়ালের ফল সম্পর্কিত প্রতিবেদন সোমবার দুপুরে বিএমআরসিতে জমা দেওয়া হয়েছে। একই সাথে বিএমআরসির তৃতীয় চিঠির সব প্রশ্নের জবাবও দেওয়া হয়েছে।
ড. মহিউদ্দিন বলেন, বানরের দেহে ট্রায়ালে করোনার কতটি ভ্যারিয়েন্টে বঙ্গভ্যাক্স কাজ করে, তা দেখা হয়েছে। ট্রায়ালে দেখা গেছে, এ পর্যন্ত করোনার যতগুলো ভ্যারিয়েন্ট এসেছে, তার সব কটিতেই বঙ্গভ্যাক্স শতভাগ কার্যকর।
তিনি বলেন, যদি বিএমআরসি আর কালক্ষেপণ না করে অতি দ্রুত নৈতিক অনুমোদন দিয়ে দেয়, তাহলে আমরা ঔষধ প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে নভেম্বরের মধ্যেই মানবদেহে ট্রায়াল শুরু করতে পারব বলে আশা করছি।
মহিউদ্দিন আরও বলেন, বানর ও মানুষের মধ্যে জিনগত বেশ মিল রয়েছে। বানরে বঙ্গভ্যাক্স সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং শতভাগ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। আমরা খুবই আশাবাদী যে, বঙ্গভ্যাক্স মানবদেহেও অনুরূপভাবে কাজ করবে।
গ্লোব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বঙ্গভ্যাক্স টিকাটি প্রাকৃতিক বিশুদ্ধ এমআরএনএ (মেসেঞ্জার রাইবোনিউক্লিক এসিড) দিয়ে তৈরি, তাই এটি সবচেয়ে বেশি নিরাপদ ও কার্যকর হওয়ার সুযোগ রয়েছে। বঙ্গভ্যাক্স টিকাটি এক ডোজের। এটি অনুমোদন পেলে বিদেশেও চাহিদা তৈরি হবে।
গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড ২০২০ সালের ২ জুলাই দেশে প্রথমবারের মতো টিকা আবিষ্কারের ঘোষণা দেয়। এর প্রায় সাড়ে তিন মাসের মাথায় ১৫ অক্টোবর গ্লোব বায়োটেকের তিনটি টিকাকে অনুমোদনপ্রার্থী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গ্লোব বায়োটেকই বিশ্বের একমাত্র প্রতিষ্ঠান যাদের সর্বোচ্চ তিনটি টিকা অনুমোদনপ্রার্থী তালিকায় রয়েছে।
চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি বঙ্গভ্যাক্সের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের নীতিগত পরীক্ষার জন্য বিএমআরসির কাছে প্রটোকল জমা দেওয়া হয়। এরপর বিএমআরসির চাহিদা অনুযায়ী সংশোধিত প্রটোকল জমা দেওয়া হয় ১৭ ফেব্রুয়ারি।
গত ২২ জুন বিএমআরসি মানবদেহে বঙ্গভ্যাক্সের পরীক্ষা চালানোর অনুমতি দেয়, যদিও এর আগে বানর বা শিম্পাঞ্জির দেহে পরীক্ষা করার শর্ত দেওয়া হয়। গত ১ আগস্ট প্রতিষ্ঠানটি বানরের দেহে পরীক্ষা শুরু করে, যা শেষ হয় ২১ অক্টোবর।
টিআই/আরএইচ